বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। ফাইল চিত্র।
প্রতিবাদ করতে গেলে সরকারের রোষের শিকার হতে হচ্ছে, এই অভিযোগে একযোগে সরব হল বিভিন্ন বিরোধী দল ও সংগঠন। ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) ডাকে দলের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী, রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ মাইতি-সহ ২২ জনের মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদী কনভেনশন থেকে ‘স্বৈরতন্ত্রে’র বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সব শক্তি মিলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হল। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বলছে, ধৃত বিধায়কের মুক্তির বিষয় আদালতের হাতে।
ধর্মতলায় আইএসএফ ও পুলিশের খণ্ডযুদ্ধের ঘটনার জেরে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ-সহ ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে দিন ছিল আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস। নওশাদদের রাখা হয়েছে পুলিশ হেফাজতে। তাঁদের আজ, বুধবার ফের আদালতে পেশ করার কথা। তার আগে মঙ্গলবার ভারত সভা হলে প্রতিবাদী কনভেনশনে তৃণমূল ও বিজেপি বাদে বিভিন্ন দল ও সংগঠনকে ডাকা হয়েছিল। প্রায় সব সংগঠনেরই বক্তব্য, সারা দেশের মতো এ রাজ্যেও গণতন্ত্র আক্রান্ত, সাংবিধানিক অধিকার পদদলিত। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সোমবারের সমাবেশ থেকেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়েছিলেন, নওশাদদের মুক্তির দাবিতে সব রকম আন্দোলনে তাঁরা সঙ্গে আছেন।
প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান কনভেনশনে বলেন, ‘‘শুধু কংগ্রেস নয়, এক জন প্রতিবাদী মানুষ হিসেবে এখানে এসেছি। কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে লড়াইয়ের নামে নাটক চলছে! সারদা, নারদ-কাণ্ডে এখনও তদন্ত সম্পূর্ণ হয়নি। প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টে হামলা হচ্ছে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ীর বক্তব্য, ‘‘বিধানসভায় বিরোধী দলের আসল প্রতিনিধি এখন এক জনই, নওশাদ। শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীর কৃপাধন্য বিরোধী দলনেতা! প্রতিবাদ করতে গেলে বিরোধীদের গ্রেফতার, মামলা অনেক দিন ধরেই চলছে। নওশাদকে জেলে আটকে রেখে প্রতিবাদ বন্ধ করা যাবে না। গণতান্ত্রিক সব শক্তি মিলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’ সিপিআইয়ের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের বাসুদেব বসু, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র-সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। গণতান্ত্রিক ভাবে বড় আন্দোলন করে অত্যাচারকে প্রতিহত করার কথা বলেন আইএসএফের কার্যকরী সভাপতি সামসুর আলি মল্লিক। এই প্রেক্ষিতে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘আন্দোলনের নামে অশান্তি, হিংসা করলে প্রশাসনের যা করণীয়, তা-ই করেছে। তা ছাড়া। মুক্তির বিষয়টি তো আদালতের হাতে। এ নিয়ে রাজনৈতিক দলের কী বলার আছে?’’