আবাসের উপভোক্তাদের থেকে কাটমানি তোলার অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আবাসের প্রত্যেক উপভোক্তার কাছ থেকে সাত হাজার টাকা করে তুলে দিতে হবে। মালদহে এমনই নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এসেছে (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি)।
ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আবাসে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। মালদহের কালিয়াচকের ৩ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের সেই প্রধান আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে জেলাশাসকের কাছে। এ বিষয়ে বিডিও সুকান্ত শিকদার বলেন, ‘‘মানুষ যাতে কাউকে বেআইনি ভাবে টাকা না দেন, সেই কারণে দশ দিন ধরে মাইক-প্রচার করা হচ্ছে এলাকায়। কেউ যদি বিডিও অফিসের নাম করে টাকা চেয়ে থাকেন এবং সেই বিষয়ে যদি অভিযোগ হয়, তা হলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’
প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়োয় ওই পঞ্চায়েত প্রধানকে নির্দেশ দিতে শোনা গিয়েছে, আবাস যোজনার তালিকায় কারও নাম তুলতে হলে তাঁর কাছ থেকে সাত হাজার টাকা নিতে হবে। উপভোক্তারা টাকা না-দিলে আবাস যোজনার তালিকায় নাম নথিভুক্ত হবে না, যা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
গত পঞ্চায়েত ভোটে নির্দল হিসাবে লড়ে জিতেছিলেন আহাদ। পরে তিনি শাসকদল তৃণমূলে যোগ দেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, আহাদ যে নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে তৃণমূলের বড় নেতাদের ‘মদত’ রয়েছে। বিজেপির মালদহ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘‘তৃণমূলের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত নেতাদের পচন ধরেছে। কাটমানি ছাড়া কোনও উপভোক্তা সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পান না। এ ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। শাসকদলে থাকার সুবাদে প্রশাসনও এদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।’’
তৃণমূলের অবশ্য বক্তব্য, কেউ যদি অন্যায় করেন, দল তাঁকে রেয়াত করবে না। প্রশাসনও কঠোর পদক্ষেপ করবে। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দুলালচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূল বড় হচ্ছে। কিছু কিছু পঞ্চায়েতের নির্দল সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর নির্দেশ রয়েছে, কোনও সদস্য কোনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে যদি দুর্নীতি করেন, কাটমানি দাবি করেন, তবে দল রেয়াত করবে না। অভিযোগের তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’