তেলেঙ্গানার এনআইটি ওয়ারাঙ্গল। —ছবি সংগৃহীত।
বিশেষ একটি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি)-তে শিক্ষকতার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্তরা অগ্রাধিকার পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যে সুবিধা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি প্রাপ্তরা পাচ্ছেন না। অভিযোগ, অন্য একটি এনআইটি-তে পোস্ট ডক্টরাল প্রোগ্রামে ভর্তি হতে গেলে কেন্দ্রীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কোনও একটা ডিগ্রি করতেই হবে বলে জানানো হচ্ছে।
হিমাচল প্রদেশের এনআইটি হামিরপুর এবং তেলেঙ্গানার এনআইটি ওয়ারাঙ্গলের এ হেন সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে। এর প্রতিবাদে বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা) রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে।
অভিযোগ, এনআইটি হামিরপুর শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ৫০০-য় থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট থেকে পিএইচডি করা থাকলে চাকরিপ্রার্থী ২৫ পয়েন্ট পাবেন। এনআইটি থেকে করলে পাবেন ২০ পয়েন্ট। বাকি কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে করলে পাবেন ১৫ পয়েন্ট।
অথচ এনআইআরএফ র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ১০০-য় থাকা প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করলে বরাদ্দ হবে ১০ পয়েন্ট। বাকিদের প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ পয়েন্ট বরাদ্দ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের এনআইআরএফ র্যাঙ্কিংয়ে যাদবপুর, কলকাতার মতো প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান অনেকটাই ওপরে। এই র্যাঙ্কিংয়ে যাদবপুর এখন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে চতুর্থ এবং সার্বিক ভাবে ত্রয়োদশে রয়েছে। কলকাতা রয়েছে যথাক্রমে দ্বাদশ এবং ২৩তম স্থানে।
জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের অভিযোগ, ‘‘এটা আইনত করা যায় না। দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ইউজিসির বিধি মেনে পিএইচডি করতে হয়। সেখানে কেন এই বৈষম্য!’’ তাঁর বক্তব্য, এনআইআরএফ র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে ৯৭ স্থানে থাকা বিশ্বভারতী থেকে পিএইচডি করলে ১৫ পয়েন্ট আর যাদবপুর থেকে করলে ১০ পয়েন্ট, এ সম্পুর্ণ অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। এই ধরনের উদ্যোগ স্পষ্টতই রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পিছন দিকে ঠেলে দেওয়ার পরিকল্পনা।
পোস্ট ডক্টরাল প্রোগ্রামে ভর্তি হতে গেলে বাধ্যতামূলক ভাবে কেন্দ্রীয় কোনও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি থাকতে হবে বলে এনআইটি ওয়ারাঙ্গল যা জানিয়েছে তারও প্রতিবাদ করেছেন পার্থপ্রতিম। এনআইটি দুর্গাপুরের অবসরপ্রাপ্ত অধিকর্তা অনুপম বসুর কথায়, এনআইটিগুলির নিয়োগ বা ভর্তির বিধিতে এ রকম কিছু থাকে না। এগুলি নির্দিষ্ট এনআইটি নিজেদের মতো করে করছে, যা একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। এ ধরনের বিভেদ কখনই কাম্য নয়।