মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভার নিরাপত্তা খতিয়ে দেখছেন উচ্চপদস্থ অফিসারেরা। রবিবার পুরশুড়ার সেকেন্দারপুরে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
হেলিকপ্টারে করে আজ, সোমবার হুগলির পুরশুড়ার সেকেন্দারপুরে জনসভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেকেন্দারপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বিস্তীর্ণ চাষজমির মধ্যে বিরাট এলাকা (তৃণমূলের হিসেবে প্রায় ৩০ বিঘা) নিয়ে সভাস্থল এবং হেলিপ্যাড বানানোকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। চাষিদের একাংশ জমি নষ্ট হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। সরব বিরোধীরাও। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা স্বেচ্ছায় জমি ছেড়ে দিয়েছেন।
যে জমিতে সভা হবে, সেখানে চাষিদের একটা অংশ বোরো চাষের বীজতলা তৈরি করেছিলেন। অনেক চাষি আলুও বসিয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, তৃণমূল নেতাদের চাপে বোরো চাষের বীজতলা ছেড়ে দিতে হয়েছে। কয়েক বিঘা জমির আলুও অপরিণত অবস্থায় তুলে নিতে হয়েছে।
বিশ্বনাথ খোটেল নামে এক বোরো চাষির ক্ষোভ, ‘‘আমার বীজতলার উপর হেলিপ্যাড হয়েছে। ৫৩ শতক বীজতলার জন্য নেতারা দু’হাজার দিয়েছেন। ওই বীজ থেকে দেড় বিঘা জমিতে বোরো চাষ করি। বিঘাপিছু ধান ফলে ১২ কুইন্টাল করে। এক কুইন্টাল ধান বিক্রি করে ১৪০০ টাকা পাই। ওই আয়টা হবে না। জমিটারও দফারফা হয়ে গেল।’’
আলুচাষি বিপ্লব সামন্তের খেদ, ‘‘আমার প্রায় দেড় বিঘা জমির আলু অসময়ে তুলতে হল। ৩৮ হাজার টাকা পেয়েছি। ওই জমি থেকে ১৫০ বস্তা আলু মিলত। দাম আরও বেশি হতো।”
এ ভাবে চাষজমিতে সভার আয়োজনে শাসক দলকে বিঁধছেন বিরোধীরা। সিপিএমের পুরশুড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক ফারুক আহমেদ লস্কর বলেন, ‘‘তৃণমূল নিজেদের কৃষক-দরদী হিসাবে জাহির করে। এখানে কয়েক জনকে সামান্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে জোর করে জমি নেওয়া হয়েছে।” বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের প্রতিবাদ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার তিনিই কৃষকদের ফসল নষ্ট করে মাঠ বানিয়ে সভা করতে আসছেন।’’
পক্ষান্তরে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের দাবি, “আমাদের নেত্রী কোনও দিন মানুষের কোনও অসুবিধা করেননি। তাঁর সেই শিক্ষা নিয়েই আমরা চলি। কারও কোনও অসুবিধা হবে না। চাষিরা নিজেরাই জমি ছেড়ে দিয়ে সভা করতে বলেছেন।”