স্পিকারকে বয়কটের পক্ষে বিরোধী শিবির।
বিল পাশ করানোর আগে দফতরের মন্ত্রীই মেনে নিলেন ‘ছাপার ভুল’ হয়েছে। কিন্তু সেই ভুল শোধরানোর কোনও পথ উল্লেখ না করেই পাশ হয়ে গেল বিল! তফসিলি জাতি-উপজাতির জন্য উপদেষ্টা পরিষদ গড়ার বিল নিয়ে এমন ঘটনায় সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। তাদের প্রশ্ন, পরিষদীয় রীতি-নীতি অনুযায়ী এমন ঘটনা কি সম্ভব?
বিধানসভায় শুক্রবার ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল শিডিউলড কাস্ট অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল বিল, ২০১৭’ পেশ হতেই বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান প্রশ্ন তোলেন, তফসিলি জাতির প্রতিনিধিদের ওই উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করার সংস্থান রয়েছে বিলে। তা হলে কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে পদাধিকারবলে ওই পরিষদের চেয়ারম্যান করা হচ্ছে? মান্নানের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো তফসিলি জাতিভুক্ত নন! মুখ্যমন্ত্রী পদও তফসিলিদের জন্য সংরক্ষিত নয়। বিল তো স্ব-বিরোধিতায় ভরা।’’ বিলটির উপরে জনমত নেওয়ার প্রস্তাব দেন বিরোধী নেতা। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে পরে বিষয়টি উত্থাপনের প্রস্তাব দেন। মান্নান অস্বীকার করায় বেশ কিছুক্ষণ তর্কাতর্কি হয় দু’জনের। শেষমেশ মান্নান ভোটাভুটি চাইলে ধ্বনিভোটে তা খারিজ হয়।
আরও পড়ুন: হাজির সুব্রতও, এর পরে শুভেন্দু
পরে মান্নান বিধানসভার অলিন্দে বলেন, ‘‘স্পিকারের এই অগণতান্ত্রিক আচরণের জন্য তাঁকে বয়কট করেছিলাম। পরিস্থিতি না বদলালে বয়কটই করতে হবে।’’ কিন্তু যে প্রশ্ন বিরোধী দলনেতা তুলেছিলেন, তার মীমাংসা করেননি অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো। বরং বিল-বিতর্কের ভাষণে মন্ত্রী বলেন, ‘‘বিষয়টি ছাপার ভুল। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তফসিলি জাতির প্রতিনিধিরা হবেন— এই মর্মে যে কথা বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ অংশে লেখা রয়েছে, তা বাদ যাবে।’’ কিন্তু বাদ দিয়ে সংশোধনী কী হবে, তার কোনও সংস্থান উল্লেখ না করেই বিল পাশ হয়ে গিয়েছে। স্পিকারের যুক্তি, বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংক্রান্ত অংশে কোনও সংশোধনী হয় না। বিলের ওই ‘স্ব-বিরোধিতা’ নিয়ে আগেই পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী ও কংগ্রেসের বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা। তার পরে ‘ভুল’ বুঝে বিল স্থগিত বা প্রত্যাহার করে নেওয়া যেত বলেই মনে করছেন বিরোধী শিবিরের নেতারা।