বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।
কেবল জোট গড়ে লড়াই নয়। এ বার ‘ভাল’ আসন বাছাই করতে লড়তে চায় কংগ্রেস। তার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিতে হবে এখনই। তারই পাশাপাশি, বিজেপির অমিত শাহ, জে পি নড্ডাদের ঘন ঘন বঙ্গ সফরের পাল্টা রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা বঢরাদের এ রাজ্যে আনতে চায় কংগ্রেস। বাংলায় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রথম বার কলকাতায় দলের বৈঠক করতে এসে এই জোড়া বার্তাই দিলেন জিতিন প্রসাদ। তাঁর দাবি, বাংলার বিধানসভা ভোটে পূর্ণশক্তি দিয়েই ঝাঁপাবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
বিধান ভবনে বৃহস্পতিবার প্রথমে প্রদেশ কংগ্রেসের বিভিন্ন কমিটির নেতা ও পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জিতিন। সন্ধ্যায় তাঁর উপস্থিতিতে বসে প্রদেশ নির্বাচন কমিটির প্রথম বৈঠক। ভোটের জন্য সাংগঠনিক ভাবে সব রকম প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বৈঠকে জিতিন জানান, বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষে বাংলার কংগ্রেস নেতারা যে মত দিয়েছেন, তাতেই সায় দেবে এআইসিসি। এই মর্মে হাইকম্যান্ডের তরফে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখন সময়ের অপেক্ষা। তবে তার জন্য আসন ভাগাভাগি ও প্রার্থী বাছাইয়ের প্রস্তুতি ফেলে রাখলে চলবে না। দিনের প্রথম বৈঠকে এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ছিলেন না। পরে নির্বাচন কমিটির বৈঠকে অধীরবাবুর উপস্থিতিতেই কংগ্রেসের জন্য এ বার কিছু বাড়তি আসন চাওয়ার দাবি উঠেছিল। জিতিন বলেন, শুধু বেশি আসন দাবি করলেই হবে না, কংগ্রেসের পক্ষে ‘ভাল’ আসনের দিকেই নজর থাকা উচিত। নয়তো ‘স্ট্রাইক রেট’ নিয়ে সমস্যা হবে। যা হয়েছে বিহারের বিধানসভা ভোটে।
বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির পর্যবেক্ষকেরা রাজ্যে ঘাঁটি গেড়ে আছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা ঘন ঘন বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছেন। কংগ্রেসের পরিকল্পনা কী? এই প্রশ্নে এ দিন জিতিন বলেন, ‘‘রাজ্যে বিজেপির ভরসা করার মতো নেতা নেই। তাই বিজেপি ভোট করছে দিল্লির নেতাদের এনে। কংগ্রেস চির কাল রাজ্যের ও স্থানীয় নেতাদের উপরে আস্থা রাখে। আর তাঁদের সহযোগিতা করতে এ বারও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা আসবেন। শীঘ্রই রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা বঢরাকে আমরা বাংলায় নিয়ে আসব।’’
জোট নিয়ে কংগ্রেসের অবস্থান কী এবং তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার কোনও ভাবনা আছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে জিতিনের বক্তব্য, ‘‘জেলায় জেলায় আন্দোলনের ঐক্য হয়েছে বামেদের সঙ্গে। যৌথ কর্মসূচি চলছে, হরতাল পালনও হয়েছে। রাস্তায় আন্দোলন হচ্ছে এক দলের সঙ্গে আর নির্বাচনী জোট হবে অন্য দলের সঙ্গে— এই ভাবনা অর্থহীন!’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘এখানে বিজেপি ও তৃণমূল একই থালায় খাচ্ছে এবং মারামারি করে বাংলার সংস্কৃতির ক্ষতি করছে।’’