ফাইল চিত্র।
একের পর এক বিধায়ক প্রকাশ্যে জেলা নেতাদের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় কোচবিহারে অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের তৃণমূল।
বুধবার তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় এক সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেন, “জগদীশ বসুনিয়া (সিতাইয়ের বিধায়ক) কী বলেছেন, আপনারা তার কী ব্যাখ্যা করছেন জানি না। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের নানা ব্যাখ্যা হয়েছে। ওটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। আমরা পর্যালোচনা করেছি। আবেগবশত কে কী বলেছেন তা নিয়ে দলীয় পর্যায়ে আলোচনা হবে।”
মিহির গোস্বামীকে নিয়ে এ দিন দলের জেলা সভাপতি বলেন, “আমরা এ কথা বলেছি মিহিরবাবু দলের গুরুত্বপূর্ণ বিধয়াক ও নেতৃত্ব। এ কথাও বলব, নেত্রী আমাদের কাছে আবেগ। তাঁর সম্পর্কে কেউ বিরূপ মন্তব্য করলে নিশ্চিত ভাবে প্রতিবাদ হবে। সেটা কেউ করেন না কেন?”
বিধায়ক মিহির গোস্বামীর বিদ্রোহ ঘোষণার পরে মঙ্গলবার সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া জেলা নেতৃত্বকে দুষে কিছু মন্তব্য করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালে বিজেপির হয়ে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরাই এখন জেলার প্রথম সারির নেতা। তাঁরা দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তার বাইরে বিধায়ক মিহির গোস্বামীর ক্ষোভের সঙ্গেও তিনি একমত বলে জানিয়ে দেন। কেন ওই বিধায়ককে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে দলের বাইরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। এ দিনও জগদীশ বলেন, “ভুল বা মিথ্যে কথা বলিনি।”
অন্যদ্কে, মিহির গোস্বামী বলেন, “আমি যে প্রশ্নগুলি তুলেছি, যে কোনও একজন আত্মসম্মানরক্ষাকারী মানুষ একই কথা বলবেন। তিনি (জগদীশ) তাঁর আন্তরিকতায় তিনি বলেছেন।” তিনি আরও বলেন, “আমি এখন পর্যন্ত এমন কোনও মন্তব্য করিনি, যা অন্যকে অসম্মান করবে। এটুকু জানি, মানুষকে সম্মান না করলে নিজের সম্মান থাকে না। অপরিণত রাজনৈতিক কর্মীরা যদি সংগঠন পরিচালনা করে, তাহলে সেই সংগঠনের সুস্থতা থাকে না বলে আমি মনে করি।”
শাসক দলের এই টানাপড়েনের মধ্যেই এ দিন মিহিরের বাড়িতে যান কংগ্রেস নেতা দেবপ্রসাদ রায়। একসময় দু’জনের মধ্যে খুব ভাল সম্পর্ক। দলীয় সূত্রের খবর, আলাদা দল করলেও দু’জনের মধ্যে বরাবর যোগাযোগ ছিল। তবে এ দিনের সাক্ষাতে নতুন করে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে জেলায়। কিছুদিন আগে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও বিধায়কের বাড়িতে গিয়েছিলেন। দু’জনের মধ্যে দীর্ঘসময় আলোচনা হয়।
মিহির অবশ্য বলেন, “সবই সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ। রাজনীতি নেই।” একই কথা দেবপ্রসাদ রায়েরও।