রোজ ভ্যালির কর্তা ইডি-র জালে ধরা পড়ার পরেই ত্রিপুরায় বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বাড়বাড়ন্তর জন্য রাজ্য সরকার তথা শাসক দলের প্রভাবশালী মন্ত্রীদেরই আবার কাঠগড়ায় তুলল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। পাশাপাশি, কংগ্রেস আজ জানিয়ে দিয়েছে, সাধারণ আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের উপর তারা চাপ বাড়াবে। প্রয়োজনে দিল্লির রাজপথে ধরনায় বসবেন কংগ্রেস নেতারা।
কী ভাবে রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের একাংশ জড়িয়ে ছিলেন, সংস্থাগুলির অনুষ্ঠানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার থেকে শুরু করে রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী জীতেন্দ্র চৌধুরী-সহ ডেপুটি স্পিকার পবিত্র কর, মন্ত্রী বিজিতা নাথ প্রমুখ সংস্থাগুলির জয়গান গেয়েছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যছবি-সহ পুস্তিকা প্রকাশ করে, এবং সিডি’র মাধ্যমে প্রকাশ করে সাংবাদিকদের হাতে আজ তুলে দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের সুদীপ রায়বর্মণ।
সুদীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘বামফ্রন্ট সরকার দুধ-কলা দিয়ে চিটফান্ড পুষেছিল। তারা সাধারণ মানুষকে সর্বস্বান্ত করে ত্রিপুরা ছেড়ে পালিয়েছে।’’ উল্লেখ্য, রাজ্যের অর্থ দফতর বিধানসভাতে তথ্য দিয়ে জানায়: সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী ত্রিপুরাতে প্রায় ১৪ লক্ষ আমানতকারী বিভিন্ন বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা রেখেছিল। তাদের সঞ্চিত অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। সুদীপবাবুদের অবশ্য দাবি, ‘‘বাস্তবে সাধারণ আমানতকারীদের লগ্নির পরিমাণ ছিল অনেক গুণ বেশি।’’
প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের প্রশ্ন, পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী মন্ত্রী মদন মিত্র-সহ বিভিন্ন সাংসদ, নেতাদের সঙ্গে সারদা গোষ্ঠীর কর্তা সুদীপ্ত সেনের ‘নিকট সম্পর্ক’-এর জেরে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই যদি তাদের জেরা করতে পারে, জেলে পুরতে পারে, তা হলে ত্রিপুরায় শাসক দলের প্রভাবশালী মন্ত্রী, নেতাদের কেন সিবিআই বা ইডি জেরা করবে না? জেলে পাঠাবে না? তাঁদের দাবি, ‘‘এ রাজ্য থেকে পালিয়ে যাওয়া সব ক’টি বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধেই সিবিআই তদন্ত শুরু করুক। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অসমে সারদাকাণ্ড ধরা পড়ার পরেই রাজ্য সরকারের ইন্ধনেই এ সব ‘চিটফান্ড’ ত্রিপুরা ছেড়ে পালায়।”