পুলিশের বাধা ঠেলেই এগোলেন সূর্য-সোমেনেরা

কাঁকিনাড়া স্টেশনের কাছে জড়ো হয়ে এ দিন ঘোষপাড়া রোড হয়ে ভাটপাড়া থানার দিকে যাওয়ার কর্মসূচি ছিল দু’দলের নেতা-কর্মীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাটপাড়া ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ০১:১০
Share:

ভাটপাড়ার শান্তি মিছিলে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম এবং সোমেন মিত্র। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

ব্যারিকেড ভেঙে, পুলিশের সঙ্গে বচসা ও ধস্তাধস্তি দিয়ে শুরু হল বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের যৌথ ভাবে পথ চলা। ভাটপাড়ায় শান্তি ফেরাতে বাম ও কংগ্রেসের শান্তি মিছিলে পুলিশের বাধা ঘিরে ধুন্ধুমার বাধল মঙ্গলবার। ঘটনাচক্রে, রাজ্য বামফ্রন্ট ও প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব যে দিন একসঙ্গে পথে নামলেন, সে দিনই ছিল জরুরি অবস্থার ৪৪তম বর্ষপূর্তি!

Advertisement

কাঁকিনাড়া স্টেশনের কাছে জড়ো হয়ে এ দিন ঘোষপাড়া রোড হয়ে ভাটপাড়া থানার দিকে যাওয়ার কর্মসূচি ছিল দু’দলের নেতা-কর্মীদের। কিন্তু মিছিলের জেরে ১৪৪ ধারা থাকা এলাকার শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে, এই যুক্তিতে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, সোমেন মিত্র, মহম্মদ সেলিমদের বাধা দেয় পুলিশ। বাম ও কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় পুলিশের ধস্তাধস্তি বাধে। পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান সিপিএমের গার্গী চট্টোপাধ্যায়, কংগ্রেসের অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকারেরা। রাস্তাতেই ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার সঙ্গে তর্কাতর্কি বাধে কংগ্রেস ও বাম নেতাদের। শেষমেশ ভাটপাড়া থানায় বসে বিমানবাবু, সূর্যবাবু, সোমেনবাবুদের সঙ্গে কথা বলেন সিপি। আর ৭-১০ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে সিপি তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন।

লোকসভা ভোটে আসন সমঝোতা করতে না পারার পরে বাম ও কংগ্রেস, দুই শিবিরেই ফল হয়েছে শোচনীয়। দু’পক্ষের নেতৃত্বই এখন বুঝতে পেরেছেন, শুধু ভোটের সময়ে আঁতাঁত করার চেষ্টায় ভাল ফল মেলে না। যার উদাহরণ ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোট। তৃণমূল ও বিজেপির মোকাবিলায় অন্য বিকল্প গড়ে তুলতে গেলে এখন থেকেই রাজনৈতিক সমঝোতা করে এগোতে হবে বাম ও কংগ্রেসকে। যে সমঝোতার উপরে দাঁড়িয়ে আগামী বিধানসভা ভোট লড়া যাবে। তার আগে রাজ্যে বিধানসভার উপনির্বাচনেও সমঝোতা করেই প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করবেন সূর্যবাবু, সোমেনবাবুরা।

Advertisement

ভাটপাড়া থেকে শুরু হওয়া যৌথ পথ যে তাঁরা আরও হাঁটবেন, তার ইঙ্গিত দিয়েই এ দিন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবু বলেছেন, ‘‘নৈরাজ্য ও মেরুকরণই রাজ্যের ভবিষ্যৎ হতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল ও বিজেপিকে বাদ দিয়ে সবাইকে একজোট হয়ে আন্দোলন, প্রতিবাদে নামতে হবে। সেটাই আজ হল, ভবিষ্যতেও হবে।’’ আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবুর বক্তব্য, ‘‘আজকের বাম-কংগ্রেসের এই যৌথ কর্মসূচি বিভাজন ও সন্ত্রাসের রাজনীতির বিরুদ্ধে রাজ্যের মানুষের কাছে একটি গ্রহণযোগ্য বিকল্প হয়ে উঠবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’ মনোজ ভট্টাচার্য, নরেন চট্টোপাধ্যায়, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বাম শরিক নেতারাও মিছিলে ছিলেন।

মিছিলে অবশ্য পুলিশকে হুঁশিয়ারিই দিয়েছেন দু’দলের নেতারা। পুলিশ বলে, কয়েক দিন আগে বিজেপির মিছিলে লাঠি চলেছিল, গ্রেফতার করা হয়েছিল অনেককে। সূর্যবাবু, সোমেনবাবুরা দাবি করেন,তা হলে তাঁদেরও গ্রেফতার করা হোক। পরে থানায় বসে আলোচনায় তাঁরা অবশ্য স্বাভাবিকতা ফেরানোর কথাই বলেছেন। সিপি মনোজ তাঁদের বলেন, ‘‘আমি মাত্র চার দিন হল দায়িত্বে এসেছি। ইতিমধ্যেই বাজার খোলা হয়েছে। স্কুল খুলেছে। আর ৭-১০ দিন সময় দিন। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবেই।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement