বৃহস্পতিবার নদিয়ার কুলগাছিতে খুন হয়েছেন বুথ কর্মী বাপি ঘোষ।—নিজস্ব চিত্র।
রাজনৈতিক হিংসায় বলি যত বাড়ে, রাজনীতির খাতায় তত লাভ। ভোটের বাজারে ‘শহিদ’ পাওয়া যায়! রাজনীতির এই ‘ওপেন সিক্রেট’ সামলাতে গিয়েও দ্বন্দ্ব রাজ্য বিজেপিতে। ‘শহিদ’ সংখ্যা ঠিক কত, দলের অন্দরেই সেই হিসেবে মিলমিশ হচ্ছে না!
বিজেপির হিসেবে, ২০১৭ সাল থেকে এ রাজ্যে ‘শহিদ’ হয়েছেন ১০৬ জন দলীয় কর্মী-সমর্থক। অথচ তাদেরই মিডিয়া সেলের হিসেব বলছে, ২০১৩ সাল থেকে তাদের কাছে যে ‘শহিদ’ তালিকা আছে, সেখানে সংখ্যাটা ৯৩। বাকি ১৩ জনের হিসেব তাদের কাছে নেই।
হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ে মৃত্যুর পরে ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের স্বাক্ষরিত যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে: ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত শহিদ’ সংখ্যা ১০৫। তার পরে বৃহস্পতিবার নদিয়ার কুলগাছির বুথ কর্মী বাপি ঘোষের মৃত্যু ধরলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১০৬। কিন্তু বিজেপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক সপ্তর্ষি চৌধুরীর দাবি, ‘‘আমার কাছে ২০১৩ সাল থেকে আমাদের দলের শহিদদের নামের তালিকা আছে। গত বছর মহালয়ায় যখন সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা কলকাতায় দলীয় শহিদদের উদ্দেশে তর্পণ করেন, তখন সংখ্যাটা ছিল ৮০। দেবেন্দ্রনাথ রায়, বাপি ঘোষকে ধরে সংখ্যাটা ৯৩। বাকি সংখ্যা কোথা থেকে আসছে, আমি জানি না।’’
বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্যপাল, নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দলের তরফে যে সব চিঠি দেওয়া হয়, তার সিংহভাগই তৈরি করেন রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। রাজ্যপালকে দেওয়া চিঠিতে জয়প্রকাশবাবুর পরামর্শেই শহিদের সংখ্যা ১০৫ লেখা হয়। তিনি তাঁর হিসেবেই অনড়। জয়প্রকাশবাবুর দাবি, ‘‘দেবেন্দ্রনাথকে ধরে আমাদের দলের শহিদের সংখ্যা ১০৫-ই হয়। বাপির মৃত্যুর পরে সংখ্যাটা ১০৬।’’