ছবি: সংগৃহীত।
জেলাস্তরের পাঠাগার কমিটিতে বঙ্গীয় গ্রন্থাগার পরিষদের প্রতিনিধিদের রাখতে নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। আর তা নিয়েই সরব হয়েছেন তৃণমূল প্রভাবিত গ্রন্থাগার সংগঠনের নেতারা। বঙ্গীয় গ্রন্থাগার পরিষদের উপরে বাম প্রভাবের অভিযোগ তুলে তাঁদের অন্তর্ভুক্তিতে আপত্তি জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও পরিষদ নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন বলে দাবি করেছে। বরং আইন অনুয়ায়ী কমিটিতে কর্মচারী-সহ অন্যদের প্রতিনিধিত্ব কেন রাখা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিষদ। উভয় পক্ষই সরকারের কাছে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছে।
প্রতিটি জেলায় স্থানীয় গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ (লোকাল লাইব্রেরি অথরিটি) রয়েছেন। গোটা রাজ্যে এমন অনেকগুলি কমিটি তাদের কার্যকালের মেয়াদ পূর্ণ করায় সেগুলি নতুন করে গঠন করতে চায় রাজ্য।
সম্প্রতি গ্রন্থাগার দফতর নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়েছে, জেলাশাসক ছাড়াও কমিটিতে রাখতে হবে জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক, জেলা জনশিক্ষা প্রসার আধিকারিক, জেলা তথ্য আধিকারিক, জেলা গ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান এবং বঙ্গীয় গ্রন্থাগার পরিষদের জেলা শাখার দু’জন করে সদস্যকে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তেই বেঁকে বসেছেন শাসক দল প্রভাবিত গ্রন্থাগার সংগঠনের নেতারা। গ্রন্থাগার-কমিটিতে শাসক-সংগঠনের প্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে কেন অন্য সংগঠনের সদস্যরা গুরুত্ব পাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যে ২৪৮০টির মধ্যে বহু সরকারি গ্রন্থাগার বন্ধ এবং যেগুলি চলছে, তার মধ্যে অনেকগুলি কার্যত ধুঁকছে। গ্রন্থাগারগুলিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শূন্যপদ রয়েছে। ফলে সরকারি গ্রন্থাগারগুলির দুরবস্থা কাটাতে ইতিবাচক চিন্তাভাবনা প্রয়োজন। সেই কারণে কমিটিতে নিজেদের অন্তর্ভুক্তি চাইছে সংগঠন-নেতারা। সংগঠনের অন্যতম নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এর প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। এমন সিদ্ধান্ত মানা যায় না।’’
পরিষদের যুগ্ম সচিব বিশ্ববরণ গুহ বলেন, ‘‘এই অরাজনৈতিক সংগঠন ১৯২৫-তে গঠিত হয়েছে। আইন অনুযায়ী লোকাল লাইব্রেরি অথরিটি এবং স্টেট লাইব্রেরি কাউন্সিলে পরিষদের সদস্যদের রাখে সরকার। কিন্তু ২০১৬-র আগে পর্যন্ত কমিটিগুলিতে কর্মচারী এবং আরও অনেকের প্রতিনিধিত্ব থাকত। এখন সেগুলি বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা মন্ত্রীকে লিখিত ভাবে এর প্রতিবাদ জানিয়েছি।’’
নিয়োগের দাবি: সাধারণ এবং স্কুল গ্রন্থাগারগুলিতে নিয়োগের দাবিতে শনিবার রাজ্যের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রন্থাগার বিজ্ঞান নিয়ে পাশ করা পড়ুয়ারা আন্দোলনে নামলেন। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ গ্রন্থাগার ও স্কুল গ্রন্থাগারে কর্মী নিয়োগ হয়নি। কর্মীর অভাবে অনেক সাধারণ গ্রন্থাগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শূন্য পদে নিয়োগ এর দাবিতেই তাঁদের আন্দোলন। গোলপার্কে তাঁদের এই নিয়ে প্রতিবাদের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।