কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে —ফাইল চিত্র।
আর জি কর, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পর এ বার কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজেও ‘হুমকি প্রথা’র অভিযোগ উঠল। এ ক্ষেত্রেও অভিযোগের তির রাজ্যের শাসক দলের ঘনিষ্ঠ এক দল জুনিয়র চিকিৎসক এবং পড়ুয়ার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ নিয়ে মামলাও দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় মঙ্গলবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ওই মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট তলব করেছেন। ১৯ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি। আদালতের খবর, সে দিন আর জি কর এবং বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের হুমকি প্রথা ও সাসপেনশন সংক্রান্ত মামলারও শুনানি হওয়ার কথা।
কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় নামে এক চিকিৎসক এই মামলা করেছেন। তাঁর আইনজীবী কোর্টে জানান, আর জি করে প্রতিবাদের সময়ে শাসক দল ঘনিষ্ঠ কয়েক জন জুনিয়র চিকিৎসক হুমকি দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বৈঠকেও হাঙ্গামা করা হয়। আদালতের খবর, এই ধরনের ঘটনা রুখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ করেছেন, সেই প্রশ্নও মামলায় তোলা হয়েছে।
এ দিন মনোজিৎ বলেন, ‘‘আর জি করে হুমকি প্রথায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। সেটি দেখার পরে, গত ৫ সেপ্টেম্বর কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে যাঁরা হামলা চালিয়েছেন, আমার চোখে আঘাত করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ যে পদক্ষেপ করেছেন তা কতটা মানা হবে সেই বিষয়টি স্পষ্ট করতেই আদালতে মামলা করেছি।’’ মনোজিতের দাবি, হুমকি প্রথা শব্দটি তাঁদের মনগড়া বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। হুমকি প্রথায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলেও, কলেজ কাউন্সিলের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সরকার। তাই ৫ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় হুমকি প্রথা শব্দটি তাঁরা ব্যবহার করছেন না। কিন্তু যে হামলা ও আক্রমণ করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সেটি জানতেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
আর জি কর কাণ্ডের পরেই বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে এই হুমকি সংস্কৃতির অভিযোগ সামনে আসে। তার পরে প্রথমে আর জি কর এবং পরে বর্ধমান মেডিক্যালের একাধিক পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করেন কর্তৃপক্ষ। পুজোর সময়ে হাই কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ জানায়, আর জি করের ৫১ জন পড়ুয়ার সাসপেনশন অবৈধ। বর্ধমান মেডিক্যালের সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়াদেরও ক্লাস করার অনুমতি দিয়েছে হাই কোর্ট।