ছবি: সংগৃহীত।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আচার্য-রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের টানাপড়েন যেন শেষ হওয়ার নয়! ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এবং সেই অভিযোগের অন্যতম মূল কথাই হল, যে-ইন্টারভিউয়ের ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করার কথা, আচার্যের প্রতিনিধির উপস্থিতি ছাড়াই সেই সাক্ষাৎকার পর্ব সেরে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি ইতিমধ্যে আচার্যকে জানানো হয়েছে বলে খবর।
গত রবিবার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং প্রফেসর পদে নিয়োগের ইন্টারভিউ ছিল। সেই সাক্ষাৎকার নিয়ে অন্তত চার দফা অভিযোগ উঠেছে। প্রথম অভিযোগ, ওই সব শিক্ষকপদে ইন্টারভিউয়ের বিষয়ে বিভাগীয় বোর্ড অব স্টাডিজ়ের অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
দ্বিতীয় অভিযোগ, ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকার কথা আচার্যের প্রতিনিধি, উপাচার্যের প্রতিনিধি, কলা বিভাগের ডিন এবং বিভাগীয় প্রধানের। কিন্তু রবিবারের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় আচার্যের প্রতিনিধি ছিলেন না। আচার্যের প্রতিনিধিকে জানানোই হয়নি, নাকি জানানো সত্ত্বেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন, তা পরিষ্কার নয়।
আরও পড়ুন: ‘এ বার কি তা হলে দেশও ছাড়তে হবে?’
তৃতীয় অভিযোগ, এক দিনে ৩৭ জন প্রার্থীর ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে। তাই ইন্টারভিউয়ে প্রার্থীদের প্রায় কিছু বলার সুযোগই ছিল না। চতুর্থ অভিযোগ, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের ক্ষেত্রে অ্যাকাডেমিক পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর (এপিআই) বা শিক্ষাগত দক্ষতা সূচক খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং রাজ্য সরকারের ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, গবেষণা ও প্রকাশিত গবেষণাপত্রের ভিত্তিতে এই এপিআই নির্ধারিত হয়। কিন্তু যাদবপুরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে সেই দক্ষতা সূচককে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
এই সব অভিযোগ তুলেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দুই অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। তাঁরা অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদের প্রার্থী। অন্যতম অভিযোগকারী ভগবান বেহেরা জানান, তাঁরা বিষয়টি উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে জানিয়েছেন। আচার্য ধনখড়কেও জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে মুখোমুখি বসে নিজেদের বক্তব্য জানাতে আচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ও চেয়েছেন তাঁরা। অভিযোগ পাঠানো হয়েছে ইউজিসি-র চেয়ারম্যানের কাছেও। বেহেরা বলেন, ‘‘আমাদের দাবি, গোটা ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে। নিরপেক্ষ কমিটি তৈরি করে অনিয়মের তদন্ত করতে হবে। উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। এখনও ইন্টারভিউয়ের কাগজপত্র দেখিনি। অনিয়ম হয়ে থাকলে আইন মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’