কঠোর: বুধবার পিনটেল ভিলেজে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
লালবাতি আর পুলিশ পাইলটের যথেচ্ছ ব্যবহারকেই এ বার ‘রেড সিগন্যাল’ দেখিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বুধবার সুকনার পিনটেল ভিলেজে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রী ও আমলাদের প্রতি বার্তা দিয়েছেন, লালবাতির যথেচ্ছ ব্যবহার বা পুলিশ পাইলট নিয়ে অযথা ঘোরাঘুরি বন্ধ করতে হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার জন্য পাইলট থাকে। হাইওয়েতে তা বেশি করে দরকার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি নিজে প্রয়োজন না হলে এ ভাবে পাইলট ব্যবহার করি না।’’ এর পরেই মন্ত্রী-আমলাদের তিনি জানান, পাইলট প্রয়োজন হলে নিন, তাতে তো কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু সব সময় নিয়ে ঘোরার দরকার নেই।
লালবাতির ব্যবহার নিয়ে আদালতের নির্দেশ রয়েছে। তার পরেও বিভিন্ন রাজ্যের মন্ত্রীদের মধ্যে এর যথেচ্ছ ব্যবহার দেখা যায়। সম্প্রতি এই ধরনের ব্যবহারে রাশ টেনে বিস্তর সমস্যায় পড়েছেন পঞ্জাবের সদ্য নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ। নিজের ঘনিষ্ঠমহলের চাপে তাঁকে পিছু হটতে হয়। তার পরে তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝোড়ো সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।
আরও পড়ুন: মিছিলের ভিড়েই ডাক ‘নবান্ন চলো’
মমতা এর সঙ্গে যোগ করেছেন পুলিশ পাইলটের ইচ্ছেমাফিক ব্যবহারও। সরকারি অফিসারেরা জানিয়েছেন, আমলাদের একাংশ যে ব্যক্তিগত কাজেও লালবাতি জ্বালিয়ে বা পাইলট নিয়ে ঘোরাঘুরি করেন, সেটা মুখ্যমন্ত্রীর কানে পৌঁছেছে। তিনি জানতে পেরেছেন, মন্ত্রীদের একাংশ পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে গেলে বা দলীয় কাজে পাইলট ব্যবহার করে থাকেন। মঙ্গলবার বর্ধমানে পালসিটের কাছে একটি লালবাতি লাগানো গাড়ি আটকায় পুলিশ। গাড়ির আরোহী নিজেকে মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর আত্মীয় বলে দাবি করেন। যদিও মন্ত্রী তা অস্বীকার করেন। ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, এ ধরনের সব খবর নিয়েই পুলিশের শীর্ষমহল থেকে খোঁজ নিয়েছেন মমতা। সব শুনে বিরক্তিও প্রকাশ করেন। তার পর এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠকের মধ্যে প্রসঙ্গটি তুলে সকলকে সতর্ক করে দিয়েছেন। কিন্তু এই বার্তার মধ্যেও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ, কোনও কোনও ধর্ম-প্রতিষ্ঠানের জনা কয়েক কর্তাব্যক্তির এই ধরনের অভ্যাস কি পাল্টাবে?