ফাইল চিত্র।
করোনা মোকাবিলা ও লকডাউন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ক্রমাগত একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিরোধী-শাসিত অন্য রাজ্যগুলিকেও পাশে পেতে তৎপর হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক দিনের মধ্যেই গোটা পরিস্থিতির বিষয়ে অ-বিজেপি রাজ্যের কিছু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
লকডাউন ও করোনা-জনিত সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের ভিডিয়ো কনফারেন্স ছিল সোমবার। মুখ্যমন্ত্রী মমতার বক্তব্য, কনফারেন্সে গিয়ে কয়েক ঘণ্টা বসে থাকার পরেও বাংলার জন্য বলার সুযোগ আসেনি। যাদের বলার কথা ছিল, তাদেরই শুধু বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, কেন্দ্র যদি শুধু নিজের সিদ্ধান্তই শুনিয়ে যেতে থাকে, রাজ্যগুলো তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা বলবে কোথায়? রাজ্যের জন্য কেন্দ্রের অর্থ সাহায্যেরই বা কী হবে? কেন্দ্রের এই মনোভাবের বিরোধিতায় একমত এ রাজ্যের দুই বিরোধী দল কংগ্রেস এবং সিপিএমও।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রের সঙ্গে ঝগড়া চাই না। গরিবদের জন্য অর্থ দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। এই পরিস্থিতিতে কোনও রাজনৈতিক দূষণ চাই না। করোনা-মোকাবিলায় আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। কিন্তু ভাল হলে কেন্দ্র প্রশংসা কুড়োবে, খারাপ হলে রাজ্যের দায়, এটা উচিত নয়। কেন্দ্রকেও তা বুঝতে হবে।’’ মমতার সংযোজন, ‘‘বাকি বিরোধী রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে কথা বলব। তাদের মতামত জানব। দীর্ঘ, মাঝারি ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি রাখা উচিত কেন্দ্রের। সিদ্ধান্তগ্রহণের আগে তারা যেন রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে। রাজ্য ভুগলে কেন্দ্রকেও ভুগতে হবে!’’ প্রধানমন্ত্রীর আগের ভিডিয়ো কনফারেন্সেই এই বিষয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য ছিল, সব রাজ্যের হয়েই তিনি ওই কথাগুলি বলছেন। রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের মতে, করোনা মোকাবিলার প্রশ্নে অন্য অ-বিজেপি রাজ্যগুলিকে পাশে নেওয়ার চেষ্টার মধ্যে দিয়ে ২০২১ সালে তাঁর নিজের রাজ্যে ভোটের কৌশলও সাজিয়ে রাখতে চাইছেন মমতা।
আরও পড়ুন: লক্ষণহীন রোগীদের জন্য ভাবনা জনস্বাস্থ্য নীতির
রাজ্যকে পর্যাপ্ত সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে কেন্দ্র যে দায় এড়িয়ে চলেছে, তা নিয়ে দ্বিমত নেই সিপিএম এবং কংগ্রেসেরও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের কথায়, ‘‘আমাদের নেতা রাহুল গাঁধী এবং আমরা বারবার বলছি, করোনা-যুদ্ধে রাজ্যগুলোই সামনের সারিতে লড়াই করছে। তাদের অর্থ সাহায্য কেন্দ্রকে করতে হবে। কিন্তু তার কোনও লক্ষণ নেই!’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘মাত্র চার ঘণ্টা সময় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন। তার পর থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ, ‘মন কি বাত’, ভিডিয়ো কনফারেন্স— শুধু ভাষণ চলছে! বিপন্ন মানুষের জন্য সহায়তা মিলছে না।’’ তবে সোমেনবাবু ও সুজনবাবুদের দাবি, রোগ মোকাবিলা থেকে শুরু করে দুর্গত মানুষের সহায়তায় এ রাজ্যের সরকারকেও আরও ‘স্বচ্ছতা ও সক্রিয়তা’ আনতে হবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)