ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে। ঘটনাচক্রে, যে জেলা থেকে বিধায়ক নির্বাচিত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঠিক তার পরে পরেই মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়লেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের প্রধান মনোজ ভার্মাও। ঘটনাচক্রে, যে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। যে কেন্দ্রের সাংসদের নাম অর্জুন সিংহ।
বিধানসভা ভোটের পর থেকেই ক্রমাগত গোলমাল চলছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায়। যা গত ২৩ জানুয়ারি ভাটপাড়ায় যা চূড়ান্ত রূপ নেয়। নেতাজির মূর্তিতে আগে মালা কে দেবে, তা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে বিজেপি-তৃণমূল। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, সাংসদ অর্জুনের নিরাপত্তারক্ষীদের তৃণমূল নেতাকে বন্দুক তাক করার ছবি ক্যামেরাবন্দি হয়। মারপিটরত অর্জুনের ছবিও প্রকাশ্যে আসে। তার পরই ঘটে গঙ্গার ঘাটে বিস্ফোরণের ঘটনা। সব মিলিয়ে ব্যারাকপুরে গোলমাল থামার নাম নেই। এ বার শান্তি ফেরাতে কমিশনারেটের প্রধানকে কার্যত ধমক দিয়ে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতি নিয়ে প্রবল উষ্মা প্রকাশ করেন বলেন, ‘‘মনোজের ওখানে দু-তিনটে ঘটনা পরিকল্পিত ভাবে ঘটানো হয়েছে। বাইরে থেকে ক্রিমিনাল আমদানি করা হচ্ছে।’’ এর পরেই সরাসরি কমিশনার মনোজকে লক্ষ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তুমি সিআইডি এবং এসটিএফের সাহায্য নাও। কলকাতা পুলিশও মনোজকে সাহায্য করবে। ডিজি মালব্যও সাহায্য করবে। কারণ, ওখানকার ক্রিমিনাল চক্রটাকে ধরা দরকার। যারা বাইরে থেকে অর্ডার দিয়ে অস্ত্র আনিয়ে আমার রাজ্যে গন্ডগোল করার চেষ্টা করে, তাদের আমি তাদের ছাড়ব না।’’
মনোজ বলেন, ‘‘ম্যাডাম, দুটো ঘটনাতেই আমরা অ্যারেস্ট করেছি।’’ মুখ্যমন্ত্রী জবাব দেন, ‘‘শুধু অ্যারেস্ট করলেই হবে না! পিছনে কারা? আজকালকার দিনে দু’হাজার টাকা দিয়ে বলছে, খুন করে চলে এসো। পিছনে কে, টাকাটা দিল কে? পিছন দিকে কে আছে সেটা ইনভেস্টিগেশন করতে হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘তুমি ইনভেস্টিগেশন করেছ ‘এ’ থেকে। কিন্তু তোমাকে যেতে হবে ‘জেড’ পর্যন্ত। এ জন্যই বলছি তুমি এসটিএফ, সিআইডি ও কলকাতা পুলিশে বিনীতের (কলকাতার পুলিশ কমিশার বিনীত গোয়েল) সাহায্য নাও।’’
মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত কি ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদের দিকে? তা খোলসা করেননি তিনি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একদা তৃণমূল নেতা অধুনা বিজেপি সাংসদ অর্জুন। মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা আক্রমণ করে তিনি বলেছেন, ‘‘যিনি এ সব করাচ্ছেন, তিনিই নির্দেশ দিচ্ছেন! উনি নিজের পার্টিকে ঠিক রাখতে পারছেন না। ওঁর পার্টির লোকেরাই বাইরে থেকে অস্ত্র আনছে। এটা নিয়ে তো এনআইএ-ও তদন্ত করছে। ওটা ওঁর নিজের লড়াই, নিজেই এখন আর ধরে রাখতে পারছেন না। পুলিশকেই তো কাজ করতে দিচ্ছেন না।’’ অর্জুনের আরও দাবি, সামনেই পুরসভার ভোট। তাই বিরোধীদের কোণঠাসা করতে আর গ্রেফতার করে জেলে পুরতেই এ সব বলছেন মুখ্যমন্ত্রী।