সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনাচক্রে তার কয়েক ঘণ্টা আগেই বিধায়ক জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে সিবিআই । গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বিধায়কের নাম করেননি তিনি। সোমবার নবান্নে মমতার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, রাজ্যের আরও এক বিধায়কের নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলতে চান কি না। জীবনকৃষ্ণের নাম করেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বড়ঞার বিধায়কের বিরুদ্ধে যে ৫০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সে প্রসঙ্গেই বা কী বলবেন? জবাবে মমতা প্রশ্নকর্তাকে থামিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘‘বললেই হয়ে গেল? ৫০০ কোটি টাকা গুণে দেখেছেন? আমি যদি কাল আপনার বাড়িতে গিয়ে বলি ৫০০ কোটির হিসাব পাওয়া গিয়েছে, আপনি মেনে নেবেন?’’ এর পরে মমতার সংযোজন, ‘‘কোনও প্রমাণ আছে? ৫০০ কোটি যে পাওয়া গিয়েছে তার কোনও প্রমাণ দেখাতে পারবে?’’
সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনাচক্রে তার কয়েক ঘণ্টা আগেই নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই । নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য প্রথমে সে ব্যাপারে কোনও কথা বলেননি মমতা। তবে সেই প্রসঙ্গ না টেনেও তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করেছেন। এমনকি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-ইডিকে পাঠিয়ে তিনি বাংলার উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলেও অভিযোগ করছেন মমতা। সেই প্রসঙ্গেই মমতাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘বেছে বেছে আমাদের বিধায়কদেরই ডেকে পাঠানো হচ্ছে। কই বিজেপির বিধায়কদের তো তলব করা হচ্ছে না। আসলে এটা বিজেপির গেমপ্ল্যান। ওরা চক্রান্ত করে এটা করছে। আমাদের বিধায়কদের টার্গেট করছে। যাতে আরও বেশি বিধায়ককে জালে জড়িয়ে আমাদের দুর্বল করতে পারে। কিন্তু সেটা হবে না। আমরা সংখ্যায় অনেক বেশি। ওরা এ সব করে কিছু করতে পারবে না।’’ অবশ্য এ ক্ষেত্রেও বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের নাম উল্লেখ করেননি মমতা।
মমতার এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, তবে কি নাম না করে জীবনকৃষ্ণের পাশেও দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী? সিবিআই দাবি করেছিল, বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ জীবনকৃষ্ণ। এ হেন কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জিতে রাজ্যের বিধায়ক হওয়ার আগে তৃণমূলের ব্লকসভাপতি পদে দীর্ঘ দিন দায়িত্ব পালন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সোমবারের মন্তব্যের পর অনেকেই বলছেন, এর আগে গরুপাচার কাণ্ডে ধৃত অনুব্রতের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছিল মমতাকে। এ ক্ষেত্রেও নাম না করে জীবনকৃষ্ণের পাশেই কি রইলেন মমতা? প্রশ্ন বিরোধী শিবিরের। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও এ নিয়ে কেউ কিছু বলেননি।