বন্‌ধ ব্যর্থ, বিজেপির দিন শেষ: মমতা

বন্‌ধ নিয়ে এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম প্রতিক্রিয়া।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ অধিকারী

 মিলান শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ডাকা বন্‌ধের তাজা ‘আপডেট’ ক্রমাগত পৌঁছচ্ছিল তাঁর কাছে, ইতালিতে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছিলেন তিনি। তার পর বললেন, ‘‘বিজেপির দিন শেষ। শুধু সন্ত্রাস, অত্যাচার, হিংসা আর খুনের রাজনীতি ছাড়া ওদের আর কিছু নেই। মানুষ এই বন্‌ধ ব্যর্থ করে দিয়েছে।’’

Advertisement

বন্‌ধ নিয়ে এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম প্রতিক্রিয়া। বাংলায় বন্‌ধ যখন শুরু, ইতালিতে তখন শেষ রাত। তবু নিজের রাজ্যের বন্‌ধ পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছিলেন মমতা। ফোনে কখনও দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন, তো কখনও আবার নির্দেশ যাচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে। সব শেষে তিনি দাবি করলেন, ‘‘বন্‌ধের বন্ধ্যা রাজনীতি ব্যর্থ হয়েছে। বাংলার মানুষকে অভিনন্দন।’’

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সরকারি অফিসে ৯৫ শতাংশের বেশি হাজিরার খবর তাঁর কাছে রয়েছে। রাস্তাঘাট, দোকানপাট, বেসরকারি অফিস-কাছারিও স্বাভাবিক। তা সত্ত্বেও গুণ্ডামি করে, ভয় দেখিয়ে বন্‌ধ করানোর চেষ্টা হয়। যা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। তাঁর অভিযোগ, বিহার ও ঝাড়খণ্ড সীমান্ত দিয়ে বাইরের লোক এনে ঝামেলা পাকাতে চাইছে বিজেপি। এ নিয়ে বিহার সরকারের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রশাসনকেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

মমতা বলেন, ‘‘সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর বা নষ্ট করলে, যাতে ক্ষতিপূরণ গুনতে হয়, তার জন্য বিধানসভায় ইতিমধ্যেই বিল পাশ করা হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনকে বলেছি, তা কড়া ভাবে কাজে লাগান। গুণ্ডামি, ভাঙচুরের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিন। দোষ করে কেউ যাতে পার না পায়।’’

কথায় কথায় বন্‌ধ ডাকার রেওয়াজের বিরোধিতা করে মমতার বক্তব্য, ‘‘মানুষের পেটে ভাত না থাকলে কীসের রাজনীতি?’’ তাঁর দাবি, আসলে মাটির সঙ্গে বিরোধীদের কোনও যোগ নেই। বন্‌ধের মতো ঘটনা ঘটিয়ে এঁরা শুধু প্রচারে ভেসে থাকতে চান। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘স্রেফ পাঁচ দিন এদের প্রচারের আলোয় থাকা বন্ধ করে দিন। দেখবেন বাড়িতেও মুখ দেখাতে পারছে না।’’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এক সময়ে আমি নিজেও মানুষের প্রয়োজনে পথে নেমেছি। অনশন করেছি টানা ২৬ দিন। কিন্তু তা বলে এ রকম সস্তার রাজনীতি কেন? কখনও পুলিশকে মেরে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার কথা বলছে, তো কখনও আবার বন্‌ধের নামে নষ্ট করছে সরকারি সম্পত্তি। সবাই মনে রাখবেন, আইন কিন্তু আইনের পথেই চলবে।’’

বিজেপিকে বিঁধে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের মতো বিভিন্ন রাজ্যে তো বিজেপি সরকার রয়েছে। কোথাও চাষিরা রোজ আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। কোথাও আবার ধর্ম, জাতপাতের নামে খুনের ঘটনা ঘটছে। তেল-গ্যাসের দর রোজ বাড়ছে। চাকরি নেই। লাফিয়ে বাড়ছে বেকারত্ব। অথচ সেখানে পশ্চিমবঙ্গে ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে। তাহলে সেখানে বন্‌ধ ডেকে পরিবেশ বিষিয়ে তোলা হবে কেন?’’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যে ২০০ একরে সিলিকন ভ্যালি তৈরি করে তথ্যপ্রযুক্তি হাব গড়ার পরিকল্পনা করেছি। লগ্নি টানার পরিকল্পনা রয়েছে চর্ম-সহ বিভিন্ন শিল্পে। এ বার জার্মানি ও ইতালিতে শিল্পমহলের তরফ থেকে ভাল সাড়া মিলেছে। কিন্তু আমি রাজ্যের বাইরে পা রাখলেই বিরোধীরা প্রতিবার গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করেন। তবে, সাধারণ মানুষ সেই চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement