পরীক্ষায় অব্যবস্থার জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোপের মুখে পড়লেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার মালদহের দুর্গাকিঙ্কর সদনে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানেই মালদহ কলেজে এক বেঞ্চে পাঁচ জন, কলেজের সাইকেল স্ট্যান্ড ও বারান্দার মেঝেতে বসিয়ে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তুলোধোনা করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি স্কুল, কলেজের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করি না। কিন্তু এক বেঞ্চে পাঁচ জনকে বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।’’ ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী এই সভা থেকেই পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেন। যে দোষী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
প্রশাসনিক বৈঠকে ছিলেন তিন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শুভেন্দু অধিকারী ও বাচ্চু হাঁসদা, সাংসদ মুকুল রায়, মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। সেখানে জেলার উন্নয়ন সংক্রান্ত পর্যালোচনা চলাকালীন খোদ মুখ্যমন্ত্রীই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ব্যবস্থার প্রসঙ্গ তোলেন। সভায় উপাচার্যের খোঁজ করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সেখানে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত রেজিষ্ট্রার অরিজিৎ দাস। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এমন গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে উপাচার্য থাকলে ভাল হতো।’’ পরীক্ষা নিয়ে কেন এই গোলমাল, তা জানতে চান। অরিজিৎবাবু বোঝানোর চেষ্টা করেন যে এ বার ২০টি সেন্টারে ১ লক্ষ ২০ হাজার পড়ুয়া পরীক্ষা দিচ্ছে। মালদহ কলেজে ৩৯০৯ পড়ুয়া রয়েছে ও সে কারণেই সেই কলেজে ২৯৬০ জনের পরীক্ষা ফেলা হয়েছিল। অতিরিক্ত বেঞ্চেরও ব্যবস্থা করা হয়। তখনই রেগে যান মুখ্যমন্ত্রী। অরিজিৎবাবুকে থামিয়ে বলেন, ‘‘বাজে ঘটনা। ওই ঘটনা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে হবে।’’
পরে উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্র বলেন, ‘‘প্রশাসনিক বৈঠকে যাওয়ার ব্যাপারে আমাকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি।’’ ২৭ এপ্রিল থেকে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলির প্রথম বর্ষের স্নাতক স্তরের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কিন্তু গোলমাল বাধে মালদহ কলেজের পরীক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গড়ে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।