মিছিলে অস্ত্র নয়, বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন কোনও রাজনৈতিক দলের নাম করেননি। তবে সাম্প্রতিক কালে এ রাজ্যে রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীতে অস্ত্র নিয়ে মিছিল ঘিরে বিতর্ক হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১১
Share:

ধর্মীয় উৎসব হোক। কিন্তু শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে, এমন কোনও মিছিল না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। ধর্মীয় উৎসবের মধ্যেও নজর রাখতে হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার দিকে। নবান্নে সরকারের নতুন সভাঘরে সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকে এমনই পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি দেখার জন্য তিনি ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে নির্দেশ দিয়েছেন। নজর রাখতে বলেছেন জেলাশাসকদেরও। মুখ্যমন্ত্রীর ওই পরামর্শের পরে জেলার এসপি-দের কাছে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠাতে চলেছে পুলিশ-প্রশাসন।

Advertisement

আরও পড়ুন: মামলায় নাকাল, মমতার তোপে মলয়

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ দিন বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্গোৎসবের দশমীর দিন নাকি অস্ত্র পুজো হবে, অস্ত্র নিয়ে মিছিল হবে বলে শোনা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, মা দুর্গার হাতেই তো অস্ত্র রয়েছে। তা হলে আবার কীসের অস্ত্র মিছিল? দশমীর পরেই রয়েছে মহরম। উৎসবের মরসুমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করার জন্য প্রশাসনকে সজাগ থাকতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন কোনও রাজনৈতিক দলের নাম করেননি। তবে সাম্প্রতিক কালে এ রাজ্যে রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীতে অস্ত্র নিয়ে মিছিল ঘিরে বিতর্ক হয়েছে। আবার রথ বা গণেশ পুজোর মতো উৎসবকে ঘিরে বিজেপি-কে রীতিমতো টেক্কা দিতে আসরে নেমেছে তৃণমূল। এর পরে দশমীর দিন অস্ত্র পুজোর সঙ্ঘ রীতির খবর প্রশাসনের কাছেও রয়েছে। তার পরেই আবার রয়েছে মহরম। কখনও অস্ত্র মিছিল, কখনও উৎসবকে ঘিরে প্রতিযোগিতার জেরে পরিস্থিতি যাতে কোনও ভাবেই উত্তেজক না হয়ে ওঠে, সে দিকেই প্রশাসনকে নজর রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীর সশস্ত্র মিছিলের পরে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিল, প্রশাসন কেন সে সব রুখতে ব্যবস্থা নিল না? পরে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী সরব হয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। খড়গপুরে অস্ত্র নিয়ে মিছিলের জন্য বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর পর্যন্ত হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতার এ দিনের পরামর্শের কথা জেনে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেছেন, ‘‘আমরা এই নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে কোনও ধর্মের ক্ষেত্রে নির্দেশ প্রযোজ্য হবে, কোনও ধর্মের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী চোখ বুজে থাকবেন— এটা যেন না হয়। নির্দেশ সকলের জন্যই সমান ভাবে পালন হওয়া উচিত।’’ একই ভাবে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীরও বক্তব্য, ‘‘সকলের জন্য এই নির্দেশ যেন সমান ভাবে প্রযোজ্য হয়, সেটা অবশ্যই প্রশাসনকে দেখতে হবে।’’

প্রশাসনের কাছে উদ্বেগের খবর, সাম্প্রতিক কালে যে কোনও ঘটনায় অস্ত্র নিয়ে যখন-তখন মিছিল করা হচ্ছে। তাতে অনেক সময় আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে নবান্নের কর্তাদের ব্যাখ্যা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement