রেলওয়ে বিদ্যাপীঠ স্কুলে ‘দুয়ারে সরকারে’র শিবির চলাকালীন শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকারের কর্মসূচি ‘দুয়ারে সরকারে’র শিবিরের দখলদারি নিয়েও শাসক দল তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের সাক্ষী রইল বর্ধমান। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানে লোকো কলোনিতে সংঘর্ষের জেরে আহত হয়েছেন দুই গোষ্ঠীর বেশ কয়েক জন। যদিও এই ঘটনায় দখলদারির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দু’পক্ষই।
শুক্রবার সকাল থেকেই বর্ধমানের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রেলওয়ে বিদ্যাপীঠ স্কুলে ‘দুয়ারে সরকারে’র শিবির চালু হয়েছে। ওই শিবিরের দখলদারি নিয়ে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক খোকন দাসের অনুগামীদের সঙ্গে ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর মহম্মদ সেলিমের গোষ্ঠীর বিবাদ বাধে। তৃণমূল নেতা খোকনের অভিযোগ, তাঁর অনুগামী শিবু ঘোষকে মারধর করেন এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর সেলিমের অনুগামীরা। ওই ঘটনার নেতৃত্বে সেলিম ছিলেন বলে দাবি করেছেন খোকন। তিনি জানিয়েছেন, বৌদি এবং স্ত্রীকে নিয়ে বিদ্যাপীঠ স্কুলে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ডের জন্য অপেক্ষা করার সময় মহম্মদ সেলিম তাঁর দলবল নিয়ে শিবুকে আক্রমণ করেন। তাঁদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনার পর এলাকার একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানে ঢুকেও শিবু ঘোষকে মারধর করা হয় বলে জানিয়েছেন খোকন।
খোকনের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর আইনুল হক, সেলিম এবং মেহবুব রহমান — সকলে মিলে প্ররিকল্পনা করে এলাকায় সন্ত্রাসের সৃষ্টি করছেন। তিনি বলেন, “সেলিম-আইনুল হকরা একসঙ্গে সিপিএম থেকে তাঁদের দলে এসেছেন। তবে সিপিএম থেকে দলে যোগ দিয়েই বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা তৃণূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালান ও ভাঙচুর করেন।” শুক্রবারও তাঁর অনুগামীদের উপর হামলায় সেলিম জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেন খোকন। অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে সন্ধ্যায় বর্ধমান থানা ঘেরাও করেন তাঁরা। পাশাপাশি, এলাকার পুলিশ-প্রশাসন ঠিক মতো কাজ করছে না বলেও অভিযোগ খোকনের।
আরও পড়ুন: বিধায়ক পদে শুভেন্দুর ইস্তফার দিকেই এখন তাকিয়ে বিজেপি
আরও পড়ুন: দিল্লিতে কৃষকদের সঙ্গে ফোনে কথা মমতার, দিলেন পাশে থাকার বার্তা
গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে আহত। —নিজস্ব চিত্র।
খোকনের অনুগামীর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, “ ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্পে হাজির হয়ে শিবু ঘোষের নেতৃত্বে কয়েক জন দাদাগিরি করছিল। এলাকার বাসিন্দারা তার প্রতিবাদ করেন। এই নিয়ে প্রথমে বাদানুবাদ হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের তাড়া করলে ছুটে পালাতে গিয়ে কেউ আহত হতে পারেন। কেউ তাঁদের মারধর করেনি।”
তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন সেলিম। তাঁর পাল্টা দাবি, “এখানে তৃণমূলের কোনও পার্টি অফিস নেই। একটা ঘরে শিবু ঘোষ তাঁর দলবল নিয়ে মদ খায়। শিবু এলাকার বাসিন্দা নয়। সে বহিরাগত।” যদিও শিবু ঘোষের দাবি, “সেলিমের নেতৃত্বে এক দল যুবক আমার উপর হামলা চালিয়েছে। মারধরও করেছে।”
শুক্রবার সন্ধ্যায় খোকন দাসের নেতৃত্বে বর্ধমান থানা ঘেরাও করা হয়। অভিযুক্ত সেলিমকে গ্রেফতারের দাবিতে দীর্ঘ ক্ষণ থানার সামনে বিক্ষোভ চলে। ঘণ্টা দেড়েক বিক্ষোভ চলার পর পুলিশি আশ্বাসে ঘেরাও কর্মসূচি উঠে যায়।