সিআইডির হাতে গ্রেফতার হলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান শেখ সিরাজুদ্দিনের স্ত্রী জেসমিন খাতুন। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান শেখ সিরাজুদ্দিনের স্ত্রী জেসমিন খাতুন। মঙ্গলবার জেসমিনকে বাঁকুড়া থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি। বুধবার তাঁকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করা হলে আদালত আগামী ৪ মার্চ পর্যন্ত তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালে এসএসসির বাতিল হয়ে যাওয়া প্যানেলের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে জেসমিন বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের ভতড়া শ্রীদুর্গা বিদ্যায়তন হাই স্কুলে সংস্কৃত বিষয়ের শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ওঠে নিজের পদের প্রভাব খাটিয়ে স্বামী শেখ সিরাজুদ্দিন স্ত্রী জেসমিনকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন।
জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের এসএসসির পরীক্ষায় বসেছিলেন জেসমিন। পরে সেই পরীক্ষার প্যানেল বাতিল করে এসএসসি। এই সময়কালে এসএসসির পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন জেসমিনের স্বামী শেখ সিরাজুদ্দিন। তাঁর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পরেই অভিযোগ দায়ের করেন বাঁকুড়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পীযূষকান্তি বেরা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। পরে হাই কোর্টে হলফনামা দিয়ে এই নিয়োগে বেনিয়মের কথা স্বীকারও করে নেয় এসএসসি। এর পরেই হাই কোর্ট সিরাজুদ্দিন ও জেসমিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। এর পরেই তড়িঘড়ি রাজ্য সরকার এসএসসির উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেয় সিরাজুদ্দিনকে। চেয়ারম্যান পদ থেকে সিরাজুদ্দিনকে অপসারণের কয়েক দিনের মধ্যেই মঙ্গলবার রাতে সিআইডি জেসমিনকে গ্রেফতার করে।
জেসমিন খাতুনের আইনজীবী সৌরিশ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিআইডি ঘটনার তদন্ত করছে। জেসমিন খাতুনের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, বাতিল প্যানেলে তাঁর চাকরি হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কারও প্রচ্ছন্ন মদত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আদালত তাঁকে ৪ মার্চ পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। আদালতে জামিনের আবেদন জানানো হয়েছে। ঘটনার কেস ডায়েরি চেয়ে পাঠানো হয়েছে।’’ বাঁকুড়ার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (সেকেন্ডারি) পীযূষকান্তি বেরা বলেন, ‘‘জেসমিন খাতুন গ্রেফতার হয়েছেন কি না, সে ব্যাপারে আমার কাছে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই। তবে তাঁর বেতন বন্ধের জন্য ইতিমধ্যেই ভতড়া শ্রীদুর্গা বিদ্যায়তন হাই স্কুলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’