গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
বড় মাছ! আপাতত এক মাস একেবারেই ছোঁবেন না। কারণ সেই মাছের মাধ্যমেই নাকি ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী মরফিন ভাইরাস। অনেকে ইতিমধ্যে এই মরফিন ভাইরাসের কবলেও পড়তে শুরু করেছেন। এখনই সাবধান না হলে এক সপ্তাহের মধ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারাও যাবেন!
গত কয়েক দিন ধরেই বনগাঁয় মানুষের ফোনে ফোনে এই ভুয়ো হোয়াটসঅ্যাপ ছড়িয়ে পড়ছিল। আতঙ্কিত হয়ে পড়ছিলেন সাধারণ মানুষ। তদন্তে নেমে ভুয়ো হোয়াটস্অ্যাপ ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে শুক্রবার একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের তিন জন অ্যাডমিন এবং এক গ্রুপ সদস্যকে গ্রেফতার করল সিআইডি।
সিআইডি সূত্রে খবর, ‘বনগাঁ লোকাল’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকেই মরফিন ভাইরাসের ভুয়ো মেসেজ পাঠানো হয়। সেই হোয়াটস্অ্যাপে ডেভিস ডিসুজা নামে কোনও এক চিকিৎসক বনগাঁর মানুষদের সতর্ক করছেন এই ভাইরাস থেকে। তিনি বলছেন, ইছামতি নদীর মাছ, যেগুলো ১ কেজি ওজনের বেশি, সেগুলোতেই এই ভাইরাস রয়েছে। মাছের থেকে শরীরে প্রবেশ করে এই প্রাণঘাতী মরফিন ভাইরাস। তার পর কিডনি পুরোপুরি অকেজো করে তোলে। এর কোনও ওষুধ নেই। শরীরে প্রবেশের এক সপ্তাহের মধ্যেই মানুষের মৃত্যু হবে। পুকুরে প্রচুর পরিমাণে মুরগি সার ব্যবহারের জন্যও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে মাছ।
হোয়াটস্অ্যাপের সেই বার্তা
এর পর ওই হোয়াটঅ্যাপে চিকিৎসক ডেভিস ডিসুজা কে কে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এর জন্য আগাম সতর্কতা কী ভাবে নিতে হবে তা-ও জানিয়েছেন। হোয়াটসঅ্যাপে তিনি লেখেন, দুর্গাপুরের অসীম কুম্ভকার নামে এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসে। এই রোগের কোনও ওষুধ নেই এখনও। সে জন্য আগামী এক মাস ১ কেজি বেশি ওজনের মাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের একেবারেই মাছের সংস্পর্শে আনা যাবে না।
আরও পড়ুন: আড়াই ঘণ্টা চরম দুর্ভোগ, শেষে যাত্রীরাই তেড়ে এসে অবরোধ তুললেন সোদপুরে
সিআইডি সূত্রে খবর, এই হোয়াটঅ্যাপ বার্তায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করেছিল এলাকায়। বনগাঁ ছাড়া বাঁকুড়া এবং হুগলিতেও ছড়িয়ে পড়েছিল এই হোয়াট্সঅ্যাপ। হোয়াটস্অ্যাপের সত্যতা প্রমাণ করতে একেবারে শেষে ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা জনস্বার্থে প্রচারিত’ এমন কথাও লেখা ছিল।
ভুয়ো হোয়াটসঅ্যাপের কথা জানতে পারার পরেই তদন্তে নামে সিআইডি। বনগাঁ লোকাল নামে ওই হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপের খোঁজ পান সিআইডি অফিসারেরা। এর পরই অমিত দত্ত, অভ্রজিৎ রায় এবং অভীক কুণ্ডু নামে তিন অ্যাডমিন সঞ্জীব বিশ্বাস নামে এক গ্রুপ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। সঞ্জীব নিজে ২০০ জনকে এই হোয়াটস্অ্যাপ ফরোওয়ার্ড করেছিলেন।