বাতিল শুধু প্যাকেট, বহাল তবিয়তে চকলেট

দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক পুলিশকর্তার কথায়, পুলিশকর্মী কম থাকায় শব্দবাজির উপরে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৭
Share:

ফাইল চিত্র।

বলতে হবে ব্যবসা পড়ে গিয়েছে। ব্যবসা জিইয়ে রাখার এটাই সহজ উপায়। তা প্রমাণ করছে চকলেট।

Advertisement

শহর জুড়ে বাজি কারবারিরা দাবি করেছেন, এ বছর নাকি পড়েই গিয়েছে শব্দবাজির বাজার। সিভিক ভলান্টিয়ারদের নজরদারিতে প্রায় ভেস্তে গিয়েছে তাঁদের ব্যবসা। কিন্তু দক্ষিণ শহরতলিতে বাজির আঁতুড়ঘরে একটু ঘোরাঘুরি করতেই দেখা গেল, বাস্তবটা একেবারেই আলাদা।

হারাল এলাকায় বিভিন্ন বাড়ির বারান্দায় যেমন থরে থরে সাজানো শুধুই আতসবাজির বাক্স। কিন্তু বাড়ির পিছনের ঘরে চকলেট বোমার স্তূপ। যার ভরসায় বেঁচে আছে আসল ব্যবসা। তবে চকলেট আর বাক্স বা প্যাকেটে নয়। সিভিক ভলান্টিয়ারদের ফাঁকি দিয়ে কারবার চালাতে হবে যে! তাই ব্র্যান্ডের ছাপ দেওয়া ১০০ চকলেটের প্যাকেট অধিকাংশ দোকানে খুলে ফেলা হয়েছে বিশ্বকর্মা পুজোর আগেই। চকলেট তৈরি করে সোজা ভরে ফেলা হচ্ছে প্লাস্টিকের প্যাকেটে। কম সংখ্যায়। কোনওটায় ২৫টা তো কোনওটায় থাকছে ৩০-৩৫টা চকলেট।

Advertisement

আরও পড়ুন: গুরুঙ্গকে ধরা দিতে নির্দেশ

বারুইপুরের কাছে হারাল এলাকার এক বড় চকলেট ব্যবসায়ীর দাবি, রাস্তায় খুব ধর-পাকড় হচ্ছে। মোড়ে মোড়ে আড়াল-আবডালে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা দাঁড়িয়ে থাকছেন। ক্রেতার আতসবাজির ব্যাগে যত্রতত্র চালানো হচ্ছে তল্লাশি। তাঁর কথায়, ‘‘সেই ব্যাগে একটাও চকলেট মিললেই বিপদ। সব বাজি ছিনিয়ে নেবেন সিভিক ভলান্টিয়ার। গত বছর থেকে এমনটাই চলছে। ওঁদের অত্যাচারে ক্রেতা কম আসছে।’’ তবে ব্যবসা সত্যিই থামছে কি? চকলেট যে বেরিয়ে যাচ্ছে মসৃণ গতিতেতেই। কথা এড়িয়ে গেলেন ব্যবসায়ী।

চম্পাহাটি ও মহেশতলার নুঙ্গি অঞ্চলে একটু চোখ-কান খোলা রেখে চললেই দেখা যায় প্যাকেট থেকে বার করে প্লাস্টিকে ভরা সব চকলেটের ভবিষ্যৎ। সিভিক ভলান্টিরারদের কড়াকড়ির জেরে পাল্টা ছক কষে ফেলেছেন ব্যবসায়ীরা। কী সেই ফন্দি? এক ব্যবসায়ী জানান, ‘‘প্লাস্টিকের প্যাকেট থেকে চকলেট বার করে সেল অথবা রকেটের প্যাকেটে তা ভরে ফেলা হচ্ছে। তার পরে নতুন করে আঠা দেওয়া প্লাস্টিক দিয়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে আতসবাজির প্যাকেট। তা হলেই আর কেউ ধরতে পারছেন না।’’ সে ভাবেই নানা প্যাকেটে সওয়ারি এখন চকলেট বোমা।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক পুলিশকর্তার কথায়, পুলিশকর্মী কম থাকায় শব্দবাজির উপরে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখন পর্যন্ত কোনও সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে বাজি ছিনতাইয়ের নিদিষ্ট অভিযোগ দায়ের হয়নি। নিদিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

ফলে বাস্তবে লুকোচুরির খেলায় এগিয়ে রয়েছেন চকলেট কারবারিরাই। কী ভাবে?

নতুন ক্রেতাদের তো তবু আতসবাজির প্যাকেটে ভরে চকলেট দেওয়া হচ্ছে। পুরনোদের ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের প্যাকেট ভর্তি চকলেট পৌঁছে যাচ্ছে সোজা বাড়ির দরজায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement