প্রতীকী ছবি।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু চুরির সাম্প্রতিক ঘটনায় হইচইয়ের মধ্যেই মিলল আর এক শিশুর খোঁজ। এই হাসপাতাল থেকেই তিন বছর আগে চুরি গিয়েছিল তিন দিনের ওই শিশুটি। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন এলাকায় হানা দিয়ে এক মহিলার কাছ থেকে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে শেফালি রবিদাস নামে ওই মহিলাকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পুরাতন মালদহের ধুমাদিঘির বাসিন্দা সোনামণি কিস্কু ওই হাসপাতালে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। শিশুটির শারীরিক সমস্যা থাকায় তার চিকিৎসা চলছিল। তিনদিন পর সোনামণি ছাড়া পেলেও শিশুটিকে তাঁর হাতে দিতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তাঁর স্বামী মন্টু বেসরার অভিযোগ, সেই সময় তাঁরা হইচই জুড়ে দেওয়ায় কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের শিশুকন্যাটি হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ। এরপরই ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মন্টু।
পুলিশ তদন্তে নামলেও শিশুটির খোঁজ পায়নি। ইংরেজবাজার থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুণ্ডু বলেন, ‘‘মন্টু বেসরা আমাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তদন্তে নেমে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে শিশু চুরির ঘটনায় একটি চক্র কাজ করছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হবে।” আজ, শুক্রবার শেফালিকে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করার কথা।
পুলিশ জানিয়েছে, হবিবপুরের এক হাতুড়ের মাধ্যমে ওই হাসপাতালের এক আয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল শেফালি। আয়াকে তিনি ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে নিয়ে প্রথমে শেফালি হবিবপুরের বাড়িতে যান। পরে চলে যান তপনে। শেফালি জেরায় জানিয়েছে, তাঁর কোনও সন্তান নেই। তাই টাকার বিনিময়ে হাসপাতাল থেকে মেয়েটিকে নিয়েছিলেন। মেয়েটির নাম রেখেছেন মনীষা। এই পরিস্থিতিতে হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে ফিরে পেয়েও তাকে কোলে পাচ্ছেন না বাবা-মা। মন্টু বলেন, ‘‘মেয়ে কথা বলতে শিখেছে দেখলাম। অভিযুক্ত মহিলাকেই মা বলে ডাকছে।
আমার কাছে একবারের জন্যেও আসতে চাইছে না।” পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত মেয়েটিকে মালদহের একটি সরকারি হোমে রাখা হয়েছে।