গঙ্গাসাগরে কপিল মুনির আশ্রমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বুধবার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড থেকে কপ্টারে চড়ে গঙ্গাসাগর রওনা দেন মমতা। সেখানে নতুন হেলিপ্যাডের উদ্বোধন করেন তিনি। বিকেলে কপিল মুনির আশ্রম পরিদর্শন করেন। সেখানে মন্দির চত্বরে আলোকসজ্জার উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি, কালীমন্দির, তারকেশ্বর, জহুরা কালী এবং তারাপীঠ— এই ৫টি মন্দিরের আদলে তৈরি নির্মাণেরও উদ্বোধনও করেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজের যাবতীয় কর্মসূচি শেষে রাতে একটি আবেগঘন ফেসবুক পোস্ট করেন তিনি।
পোস্টের শুরুতেই তিনি লেখেন, ‘‘সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার।’’ তারপরেই তাঁর সাগর সফরে এসে একজন সাংবাদিকের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর জানান। সঙ্গে জানিয়ে দেন তাঁকে কলকাতায় পাঠিয়ে সুস্থ করে তোলার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
নিজের পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘সাগরদ্বীপে পৌঁছে মা-বোনেদের শ্রুতিমধুর শঙ্খ-ধ্বনি আমাকে আবেগমথিত করে তুলেছিল। এই বারের গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতিপর্ব আমরা বহু পূর্বে সেরে ফেলেছিলাম। পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে আমি ৩টি হেলিপ্যাড, কুরুলিয়া খালের উপর কামারহাট সেতু, কপিলমুনির আশ্রম সংলগ্ন একতল ভবন এবং মন্দিরের উন্নতিকল্পে আরও বেশ কিছু পরিকাঠামোর আজ উদ্বোধন করলাম।’’ এর পরেই তিনি জানান, এ বারের মেলা আয়োজনের আগে কোন কোন নতুন বিষয় ও প্রকল্পের সূচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘বাংলার মোট পাঁচটি মন্দির তথা-দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট, তারাপীঠ, তারকেশ্বর এবং জহুরা কালীবাড়ির অবিকল প্রতিরূপ উদ্বোধন করলাম মেলা প্রাঙ্গণে। এই বছর আলোক-মালায় সেজে উঠেছে মেলা চত্বর। এই অনিন্দ্য সুন্দর আলোক-ঝর্ণার শোভা এইবারের মেলার অন্যতম আকর্ষণ।’’
তিনি যে বুধবার গঙ্গাসাগরে ভারত সেবাশ্রম সংঘের মন্দিরে গিয়েছিলেন, তাও উল্লেখ করেছেন। সঙ্গে মমতা লিখেছেন, ‘‘মানুষের কল্যাণের হিতার্থে আমরা তীর্থ-কর মুকুব করেছি। উৎসবের সময় যেকোনো পুণ্যার্থী দুর্ঘটনার কবলে পড়লে, আমাদের সরকারের তরফে তাঁদের জন্য ৫ লক্ষ টাকার বীমার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগত স্তরে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছি, যেন এই ইতিহাস সমৃদ্ধ গঙ্গাসাগর মেলা, জাতীয় মেলার তকমায় শোভিত হয়ে উঠুক। সাগরবাসী আমার হৃদয়ের অত্যন্ত কাছের। রাজ্য সরকারের একক প্রয়াসে এইখানে দেশের অন্যতম বৃহৎ মেলা আয়োজিত হয়।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘এই মেলা রাজ্যের ঐতিহ্য। এই মেলায় আগত সকলকে ভালো রাখা, সুস্থ রাখার দায়িত্ব আমাদের। আগত সকল পুণ্যার্থীদের বলবো নিয়ম মেনে এই পুণ্য স্নানের অংশ হয়ে উঠুন। সাগরদ্বীপের এই পুণ্য জলে ধুয়ে যাক আপনাদের জীবনের সমস্ত গ্লানি।