গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ‘তলবে’ সাড়া দিলেন না রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। শুক্রবার নবান্নের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লাকে চিঠি পাঠিয়ে এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে আলাপনই চিঠিটি লিখেছেন।
বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে সভা করতে যাওয়ার পথে দক্ষিণ ২৪ পরগনার শিরাকোলে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। ওই হামলার ঘটনা এবং পশ্চিমবঙ্গের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিশদে জানতে রাজ্য প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্তাকে আগামী ১৪ ডিসেম্বর (সোমবার) দিল্লিতে বৈঠকের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকে লেখা চিঠিতে আলাপন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার জেড-ক্যাটেগরি সুরক্ষাপ্রাপ্ত নড্ডা-সহ বিজেপি নেতাদের উপর হামলার ঘটনায় তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, নড্ডার জন্য রাজ্য পুলিশ বুলেটপ্রুফ গাড়ি এবং পাইলট কারের ব্যবস্থা করেছিল। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি কনভয়ে ছিল সিআরপিএফ বাহিনী।
আলাপন লিখেছেন, ‘রাজ্য পুলিশের এক ডিআইজি নিজে এলাকায় গিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার তদারকিতে ছিলেন। যাত্রাপথে (কনভয়ের) ৪ জন অতিরিক্ত সুপার, ৮ জন ডিএসপি, ৭০ জন সাব-ইনস্পেক্টর এবং এএসআই, ৪০ জন র্যাফ জওয়ান, ২৫৯ জন কনস্টেবলের পাশাপাশি ৩৫০ জন অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন ছিল। কেন্দ্রীয় বাহিনী তাদের সব ব্যবস্থাপনা-সহ মোতায়েন ছিল’।
আরও পড়ুন: নড্ডার কনভয়ে হামলা নিয়ে এ বার মুখ্যসচিব ও ডিজি-কে দিল্লিতে তলব
মুখ্যসচিবের দাবি, সুরক্ষায় মোতায়েন নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবেই পালন করেছেন। নড্ডা-সহ নিরাপত্তা প্রাপ্ত নেতাদের গাড়িগুলি হামলার শিকার হয়নি। তাঁর দাবি, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কারণ হল, নিরাপত্তা জন্য নথিভুক্ত নয় এমন বহু গাড়ি কনভয়ে ঢুকে পড়েছিল।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলায় ৩টি মামলা রুজু করা হয়েছে। তার মধ্যে উস্তি এবং ফলতা থানায় রুজু মামলা দু’টিতে সুনির্দিষ্ট ভাবে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে। ওই দু’টি মামলায় ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে অবহিত করার কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে আলাপনের বার্তা, ‘রাজ্য সরকার বিষয়টিকে চূড়ান্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এই পরিস্থিতিতে আমার অনুরোধ, বৈঠকে (১৪ ডিসেম্বরের) রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের ব্যক্তিগত উপস্থিতি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক’।
বিজেপি-র অভিযোগ শিরাকোলের হামলাকারীরা তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী। শুক্রবার সকালে বিজেপি সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের চিঠির বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিলেন। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘গতকাল বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার কনভয়ে হামলা, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজি-কে আগামী ১৪ ডিসেম্বর দিল্লিতে তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জানা উচিত যে, ওঁর জঙ্গলরাজে লাগাম টানার জন্য দেশে সংবিধান এবং অসংখ্য আইন রয়েছে’।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর উড়ানের তথ্য প্রকাশে স্থগিতাদেশ আদালতের