(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বুধবার সেই মামলার প্রথম শুনানিও হয়েছে। তার পর মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সঞ্জয় বসু তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যখন নিজেই এক জন মহিলা, তখন তিনি আরও ভাল ভাবে মহিলাদের যন্ত্রণার কথা বুঝবেন।’’ মাস দুয়েক আগে রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপাল বোসের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী।
সঞ্জয় তাঁর বিবৃতিতে আরও জানিয়েছেন, বুধবার দুপুর পর্যন্ত মামলা সংক্রান্ত কাগজ হাতে পাননি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ খণ্ডাতে যে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে, তা-ও জানিয়েছেন সঞ্জয়। বিবৃতিতে মমতার আইনজীবী এ-ও উল্লেখ করেছেন, এই মামলা দায়ের আসলে রাজ্যপালের রাজনৈতিক বিষয় চরিতার্থ করা এবং বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী দু’জনের শপথগ্রহণ বিলম্বিত করার চেষ্টা।
সম্প্রতি নবান্নের একটি সরকারি বৈঠক থেকে রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছিলেন মমতা। রাজ্যের দুই হবু বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেন সরকারের শপথগ্রহণ নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে রাজ্যের যে টানাপড়েন চলছে, সে ব্যাপারে মমতা বলেছিলেন, ‘‘জেতার পরেও এক মাস ধরে আমার বিধায়কেরা বসে আছেন! রাজ্যপাল শপথ নিতে দিচ্ছেন না। মানুষ ওঁদের নির্বাচিত করেছে। ওঁর কী অধিকার তাঁদের শপথ নিতে না দেওয়ার? উনি হয় স্পিকারকে এই অধিকার (শপথগ্রহণ করানোর) দিন, নয়তো ডেপুটি স্পিকারকে দিন। আর তা না হলে নিজে বিধানসভায় যান। ওঁর রাজভবনে কেন সকলে যাবে? রাজভবনে যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি চলছে, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছে বলে আমার কাছে অভিযোগ করেছে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়েই মানহানির মামলা করেছেন রাজ্যপাল। বিচারপতি কৃষ্ণা রাওয়ের এজলাসে বুধবার সেই মামলার শুনানি হয়। বিচারপতি রাও নির্দেশ দিয়েছেন, রাজ্যপাল বোস সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন্তব্য যে সব সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলিকেও এই মামলায় যুক্ত করতে হবে। বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।