গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামছাড়া দাম নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ চাইলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মর্মে তিনি সোমবার প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে মমতা জানিয়েছেন, নয়া কৃষি আইনের জেরে ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা। নয়া অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের কারণেও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। বাজারে আলু, পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া। এর ফলে কৃষকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে লিখেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। পরিস্থিতি সামলাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন মমতা। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করে সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
মমতা লিখেছেন, ‘নতুন অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে ডাল, তৈলবীজ, আলু, পেঁয়াজের মতো জিনিসকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে’। তাঁর মতে, এই সংশোধনের ফলে বাজারে আলু-পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। নতুন আইনে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বণ্টনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারগুলির ভূমিকা কমানো হয়েছে বলে সাধারণ মানুষের কাছে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কিছু করতে পারছে না বলেও মমতা জানিয়েছেন মোদীকে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার হাত গুটিয়ে থাকলে সাধারণ মানুষের বিপদ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তিনি। মমতা লিখেছেন, ‘শেষ কয়েক সপ্তাহে বাজারে আলু, পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি’।
আরও পড়ুন: ৩৫ কোটি প্রতারণার অভিযোগে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার-সহ গ্রেফতার ৩
২০১৪-’১৫ সালে একই অবস্থা হয়েছিল বলেও চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তখন রাজ্য সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হয়েছিল। নতুন আইনে সেই ক্ষমতা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মমতার দাবি। তিনি লিখেছেন, ‘‘সে কারণেই কালোবাজারি রুখতে কেন্দ্রীয় সরকারকে অবিলম্বে পদক্ষেপ করার আবেদন জানাচ্ছি। বেআইনি মজুত রুখে যদি বাজারে যথেষ্ট পণ্যের সরবরাহ করা যায়, তাহলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে’।
আরও পড়ুন: বিহারে জল্পনা তেজস্বীকে ঘিরে, ‘চোরাশিকার’ রুখতে সক্রিয় কংগ্রেস
এখানেই থামেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি না পারে, তা হলে রাজ্যের হাতে আগের মতোই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হোক। রাজ্যই তাহলে উৎপাদন, বণ্টন, বিক্রি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। মমতার মতে, পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে, তাতে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ না করলে মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে।