পটল পোস্ত খেয়ে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী রমন

বাম আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নকশালবাড়িতে দীর্ঘদিনের বিজেপি কর্মী রাজু মাহালি, গীতা মাহালির বাড়িতে গিয়ে দুপুরের ভোজ সারেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। দু’দিনের মেদিনীপুরের সফরে এসে একই পথে হাঁটলেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহও। এক আদিবাসী পরিবারের বাড়িতেই মধ্যাহ্নভোজ করেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ০২:৩৬
Share:

ভোজ: মেদিনীপুরে এক আদিবাসী পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ সারছেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

শুরুটা করেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি। মেদিনীপুরে এসে সেই পথেই হাঁটলেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

বাম আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নকশালবাড়িতে দীর্ঘদিনের বিজেপি কর্মী রাজু মাহালি, গীতা মাহালির বাড়িতে গিয়ে দুপুরের ভোজ সারেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। দু’দিনের মেদিনীপুরের সফরে এসে একই পথে হাঁটলেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহও। এক আদিবাসী পরিবারের বাড়িতেই মধ্যাহ্নভোজ করেন তিনি।

অমিত শাহের মেনুতে সেদিন ছিল- ভাত, রুটি, ডাল, পটল ভাজা, আলু-পটলের তরকারি, পাঁপড় ভাজা, দই, মিষ্টি। আর শুক্রবার রমন সিংহও দুপুরের ভোজ সারেন ভাত, রুটি, ডাল, পটলভাজা, বেগুনভাজা, শাকভাজা, পটল পোস্ত, মিষ্টি, দই, চাটনি খেয়ে।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে দেড়টা নাগাদ হবিবপুরের বেনেপুকুরপাড়ের পচা ভুঁইয়ার বাড়িতে পৌঁছন রমন সিংহ। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ, দলের রাজ্য সম্পাদক দিলীপ ঘোষেরা। পচা দিনমজুর। সামান্য জমি রয়েছে। সেই জমি চষে আর দিনমজুরি করেই সংসার চলে। টিনের ছাউনি দেওয়া একফালি মাটির ঘর। বিজেপির একনিষ্ঠ কর্মী পচার বাড়িতে পৌঁছনোর পর তাঁকে বরণ করেন নেন পরিবারের লোকজনেরা। বাড়ির সামনে খাটিয়া পাতা ছিল। খাটিয়ায় বসেই খানিক জিরিয়ে নেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী। খানিক পরেই মধ্যাহ্নভোজ সারতে ঢুকে পড়েন মাটির বাড়িতে।

বাড়িতে ঢুকেই হাঁটু মুড়ে মেঝেতে বসে পড়েন রমন সিংহ। চেয়ে নেন শালপাতার থালা, জল। এ দিন সকাল থেকেই দম ফেলার ফুরসৎ ছিল না ভুঁইয়া দম্পত্তির। পচার স্ত্রী ঊর্মিলাদেবী বাড়ির দেওয়াল-মেঝেতে আলপনাও দিয়েছিলেন। অতিথির জন্য সব রান্নাও করেছেন তিনি। শালপাতায় পাত পেড়ে খাচ্ছেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী। এটা দেখতে তখন বাড়ির বাইরে উৎসাহী প্রতিবেশীদের ভিড়।

মধ্যাহ্নভোজ সেরে বাড়ির বাইরে এসে খাটিয়ায় বসে ফের খানিক জিরিয়ে নেন রমন সিংহ। কথা বলেন প্রতিবেশীদের সঙ্গে। যাওয়ার আগে ফের ঊর্মিলাদেবীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। বলে যান, “রান্না খুবই ভাল হয়েছে।” গৃহকর্ত্রী তখন আপ্লুত। পরে তিনি বলছিলেন, “তাড়াহুড়ো করে ভালমন্দ বানিয়েছি। উনি তৃপ্তি করে খেয়েছেন। এ পরমপ্রাপ্তি।” সঙ্গে সংযোজন, “শাক ভাজা আর পটল পোস্তটা ওঁর সবচেয়ে ভাল লেগেছে।”

এ দিন বিকেলে মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে ‘মোদী মেলা’র উদ্বোধনে যান রমন। সেখানে মিনিট কুড়ির বক্তব্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম মুখে না আনলেও আগাগোড়া তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করেছেন ছত্তীসগঢঞের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এ রাজ্যের মানুষ আতঙ্কে আছেন। এখানে সারদা-নারদা-রোজভ্যালিতে দুর্নীতি হয়েছে। বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। যেখানে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক, ভয় গ্রাস করে, সেখানেই শেষের শুরু হয়। দেশ চাইছে, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় বিজেপি আসুক। রাজ্যের মানুষও তাই চাইছেন। পশ্চিমবঙ্গে পদ্ম ফুটবেই।’’

এই অনুষ্ঠানেও ছিলেন রাহুলবাবু, দিলীপবাবুরাও। রমন আরও বলেন, “মেদিনীপুরে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বড় ভূমিকা ছিল মেদিনীপুরের। এখানে এসে শুনলাম, এই বিদ্যাসাগর হলের দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই হলে এসেও অন্য অনুভূতি হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement