Mamata Banerjee

বোলপুরে ট্রেন থামতেই মমতার দরজায় ভিড়, দিলেন অমর্ত্যের জন্য ভাল করে আন্দোলনের পরামর্শ

তৃণমূল সূত্রে খবর, বুধবার দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে অমর্ত্যের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে গিয়েছেন মমতা। এই বিষয়ে নির্দিষ্ট পরামর্শও দিয়েছেন চন্দ্রনাথ এবং বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরীকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৩ ১৯:৪০
Share:

ট্রেনের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন মমতা। নিজস্ব চিত্র।

এ বার সরাইঘাট এক্সপ্রেসে মালদহ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমানের পর কিছু ক্ষণ বোলপুর স্টেশনেও দাঁড়াল তাঁর ট্রেন। সেখানেও ট্রেনের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন মমতা। দলীয় সূত্রে খবর, বিশ্বভারতীর সঙ্গে জমি বিতর্কে অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়ে যেন ভাল করে আন্দোলন সংগঠিত করা হয়।

Advertisement

সম্প্রতি অমর্ত্যকে নোটিস ধরিয়ে ৬ মে-র মধ্যে বাড়ি খালি করে দিতে বলেছে বিশ্বভারতী। যা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিন্‌হাকে নোবেলজয়ীর বাড়ি ‘প্রতীচী’র কাছে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ আয়োজনও করারও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো মঞ্চ বাঁধার কাজও শুরু হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, বুধবারও দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে অমর্ত্যের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে গিয়েছেন মমতা। এই বিষয়ে নির্দিষ্ট পরামর্শও দিয়েছেন চন্দ্রনাথ এবং বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরীকে। পরে স্টেশন থেকে ফেরার পথে এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘অমর্ত্যবাবুর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন দিদি। আগামী ৬ এবং ৭ তারিখ ভাল করে আন্দোলন করতে বলেছেন আমাদের। আমরা দিদির কথা মতোই আন্দোলন করব।’’

বুধবার বিকেলে ট্রেন বোলপুরে থামার পরেই দরজার কাছে এসে দাঁড়ান মমতা। দলের নেতা-কর্মী এবং সমর্থকেরা আগে থেকেই সেখানে হাজির ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে দরজার কাছে দেখা মাত্রই এগিয়ে আসেন। মমতাও তাঁদের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ কথা বলেন। তাঁর হাতে চপ-মুড়ি তুলে দেন জেলার নেতারা।

Advertisement

গত ১৯ এপ্রিল রাতে নোটিস জারি করে বিশ্বভারতী জানিয়ে দেয়, অমর্ত্য এবং সংশ্লিষ্ট যাঁরা ১৩ ডেসিমাল জমি (নোটিসে বলা হয়েছে, প্রতীচীর উত্তর-পশ্চিম কোণের জমি) দখলে রেখেছেন, তাঁদের ১৫ দিনের মধ্যে বা ৬ মে-র মধ্যে তা খালি করে দিতে হবে। না হলে অমর্ত্য এবং সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে উল্লিখিত জায়গা থেকে ‘উচ্ছেদ’ করা হবে। নোটিসে দাবি করা হয়েছে, ‘ওই জমি জনগণের সম্পত্তি। তা দখল করে রাখা যায় না। অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে অনেক সময় দেওয়া হয়েছে। তাঁকে সশরীর হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। উনি বা ওঁর কোনও প্রতিনিধি আসেননি’। পরে সেই নোটিস ‘প্রতীচী’ বাড়ির গেটে সাঁটিয়েও দেওয়া হয়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতীচীতে গিয়ে পুরো ১.৩৮ একর জমির কাগজ অমর্ত্যের হাতে তুলে দিয়ে এসেছেন এ বছর জানুয়ারিতে। তার পরেও বিশ্বভারতী কী ভাবে তাঁকে ১৩ ডেসিমাল জমি খালি করার নির্দেশ দিতে পারে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তা ছাড়া, অমর্ত্যের আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে প্রতীচীর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে বীরভূম জেলা প্রশাসনের হাতে। এর পরেও ‘উচ্ছেদ’-এর নোটিস ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। জেলা প্রশাসনের সূত্রে বলা হচ্ছে, অমর্ত্যের পিতা প্রয়াত আশুতোষ সেনের নামে ১.৩৮ একর জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল। তার রেকর্ড ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে রয়েছে। পরবর্তী কালে ১.৩৮ একর জমিই অমর্ত্যের নামে রেকর্ড করানো হয়। সুতরাং সেই রেকর্ড সংশোধন না-করে তাঁকে উচ্ছেদ-নোটিস দেওয়া যায় না।

বিশ্বভারতীর নোটিস নিয়ে বিতর্কের আবহে মমতা বলেছেন, ‘‘বাংলায় ওরা আগুন নিয়ে খেলছে। আমি ওদের ঔদ্ধত্য দেখেছি। বলতে শুনেছি, ওরা অমর্ত্য সেনের বাড়ি বুলডোজ়ারে গুঁড়িয়ে দেবে। যদি ওরা ওঁর বাড়ি ভাঙে আমি গিয়ে বসব ওখানে। আমি লড়াই করব। আমি দেখতে চাই, ওরা যা করবে বলেছে, সেটা ওরা কী করে করে। যদি সেটা হয়, তবে আমি সবার আগে সেখানে যাব। এবং ওখানে গিয়ে বসব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement