মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবার সকালে ইদের নমাজে উপস্থিত থাকতে পারলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনের নজরদারিতে রেড রোডে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হল নমাজ। পঞ্চায়েতের ভোটপ্রচারে উত্তরবঙ্গে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলে জলপাইগুড়ির ক্রান্তি থেকে বাগডোগরা যাওয়ার পথে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হেলিকপ্টার দুর্বিপাকের মুখে পড়েন তিনি। কপ্টার জরুরি অবতরণ করে শিলিগুড়ির অদূরে সেবক এয়ারবেসে। কপ্টার থেকে নামতে গিয়ে পায়ে ও কোমরে চোট পান মমতা। বাঁ হাঁটুর লিগামেন্ট এবং বাঁ দিকের হিপ জয়েন্টের লিগামেন্টেও চোট পেয়েছেন তিনি।
এই শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ইদের নমাজে উপস্থিত থাকতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ কলকাতার বড় মসজিদ এবং নাখোদা মসজিদে, সকাল ৭টা নাগাদ টিপু সুলতান মসজিদে এবং সকাল সাড়ে ৮টা রেড রোডে নমাজে অংশ নেওয়ার কথা ছিল মমতার। কিন্তু চোট পাওয়ার কারণে নমাজে অংশ নিতে পারেননি তিনি। কিন্তু নমাজে অংশ নিতে না পারলেও বৃহস্পতিবার সকালে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সকলকে ইদ-উল-আযহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ফেসবুক পেজের মাধ্যমে শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারেও ইদ উপলক্ষে সকলকে শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়ে অভিষেক লেখেন, ‘‘সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাই। এই শুভ উৎসব আমাদের সকলকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসুক। বিচ্ছেদ ভুলে আমরা যেন ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করে তুলি। আসুন, সকলে মিলে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলি।’’
মঙ্গলবার কলকাতায় ফেরার পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে। এমআরআই ইত্যাদি পরীক্ষা করানোর পর দেখা যায়, তাঁর পায়ের লিগামেন্টে চোট লেগেছে। আঘাত লেগেছে কোমরেও। চিকিৎসকেরা তাঁকে ভর্তি করে নিতেই চেয়েছিলেন। কিন্তু মমতা রাতেই কালীঘাটের বাড়িতে ফিরে যান। চিকিৎসকদের জানান, বাড়িতে তাঁদের পরামর্শ মেনে বিশ্রাম করবেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার সন্ধ্যায় নবান্নের তরফে মমতার স্বাস্থ্য বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছিল।
ওই হেল্থ বুলেটিন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেও এখনও ব্যথা রয়েছে তাঁর। এমনকি সামান্য নড়াচড়া করলেও সেই ব্যথা বাড়ছে। বুধবার বিকেলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করেছিলেন। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ফিজ়িওথেরাপি করানো হয়েছে তাঁর। মঙ্গলবার রাতের মতোই বুধবারেও মুখ্যমন্ত্রীকে বাড়িতে থাকার এবং নিয়ন্ত্রিত হাঁটাচলা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। আপাতত তাঁর ফিজ়িওথেরাপিও চলবে বলেও নবান্নের স্বাস্থ্য বুলেটিনে জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার সময় উপস্থিত ছিলেন ফিজিক্যাল মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান রাজেশ প্রামাণিক, রেডিয়োলজি বিভাগের প্রধান অর্চনা সিংহ এবং নিউরো মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান অলোক রক্ষিত।
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচি রয়েছে বীরভূমে। পাশাপাশি আগামী ১৪ জুলাই সিমলায় বিজেপি-বিরোধী দলগুলির বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে তিনি বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সংশ্লিষ্ট মহলে আলোচনা চলছে।