ছত্রধর মাহাতো। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোকে শুক্রবার টানা পাঁচ ঘন্টা জেরা করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। পুরনো দু’টি মামলাতেই এই জি়জ্ঞাসাবাদ।
শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে ২০৭ নম্বর কোবরা ব্যাটালিয়নের দফতরে ছত্রধরকে ম্যারাথন জেরা করেন এনআইএ-র দুই অফিসার। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে লালগড় থানা মারফত নোটিস পাঠিয়ে ছত্রধরকে কোবরার দফতরে হাজির হতে বলা হয়। নোটিসটি পাঠান এনআইএ-র কলকাতা শাখার ডিএসপি কাঞ্চন মিত্র। তিনিই ছত্রধরের বিরুদ্ধে পুরনো দু’টি মামলার পুনর্তদন্তের তদন্তকারী অফিসার। এ দিন সকাল ১১টায় দু’জন নিরাপত্তা রক্ষীকে নিয়ে হাজির হয়ে যান ছত্রধর। সাড়ে এগারোটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত টানা ৫ ঘন্টা তাঁকে জেরা করেন কাঞ্চন মিত্র এবং এনআইএ-র কলকাতা শাখার এসপি পদমর্যাদার এক অফিসার। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলে জেরা-পর্ব।
লালগড়ের ধরমপুর অঞ্চলের শালবনি গ্রামে মাওবাদীদের হাতে সিপিএম কর্মী প্রবীর মাহাতোর খুনের মামলায় এ দিন ছত্রধরকে জেরা করা হয়েছে। জেরা শেষে তাঁকে ফের এক দফা নোটিস ধরিয়ে আজ, শনিবার সকাল ৯টায় বাঁশতলায় রাজধানী এক্সপ্রেস আটকের মামলায় জেরার কথা জানানো হয়েছে। ছত্রধর এ দিনই এনআইএ অফিসারদের জানান, রাজধানী এক্সপ্রেস আটকের সময় তিনি জেলবন্দি ছিলেন। তবে তদন্তের স্বার্থে তিনি সহযোগিতা করবেন।
ইউএপিএ মামলায় হাইকোর্ট ছত্রধরের সাজার মেয়াদ কমানোয় গত ফেব্রুয়ারিতে লালগড়ের আমলিয়া গ্রামে ফেরেন ছত্রধর। তার পরপরই লালগড় ও ঝাড়গ্রাম থানায় দায়ের হওয়া ১১ বছর আগের দু’টি মামলার পুনর্তদন্তের জন্য কলকাতার বিশেষ আদালতে আবেদন জানায় এনআইএ। আবেদন মঞ্জুর হওয়ায় নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। ইতিমধ্যে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের পদ পেয়েছেন মাওবাদী-পর্বে জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর।
এ দিন জেরা শেষে বেরিয়ে ছত্রধর বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিতে আমাকে হয়রান করার পরিকল্পনা চলছে। আমি ওই সব ঘটনায় যুক্ত নই। তাই ভীতও নই।’’ ছত্রধরের আইনজীবী কৌশিক সিংহের কথায়, ‘‘দীর্ঘ ১১ বছর পরে পুনর্তদন্তের যৌক্তিকতা নিয়েই আইনগত প্রশ্ন রয়েছে। বিগত দিনে বহু মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন ছত্রধর। ফলে, এনআইএ-র তদন্তে ছত্রধরের বিরুদ্ধে নতুন কোনও তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’’