সূর্যের স্ত্রীর নামে চার্জশিট, প্রতিহিংসা দেখছে সিপিএম

এক বছর ন’মাস তদন্ত করার পরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের স্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিল রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। সূর্যবাবুর স্ত্রী ঊষা মিশ্র এবং তাঁর কয়েক জন আত্মীয় পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি বেসরকারি সংস্থা চালান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১৪
Share:

ঊষা মিশ্র

এক বছর ন’মাস তদন্ত করার পরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের স্ত্রীর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিল রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। সূর্যবাবুর স্ত্রী ঊষা মিশ্র এবং তাঁর কয়েক জন আত্মীয় পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি বেসরকারি সংস্থা চালান। সংস্থাটির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থার টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে রুজু হওয়া মামলায় বুধবার ওই চার্জশিট জমা পড়েছে। যাতে ঊষাদেবী, সূর্যবাবুর আর এক আত্মীয় ও সংস্থার আরও কয়েক জন মাথার নাম আছে বলে আদালত সূত্রের খবর।

Advertisement

কলকাতার বিচার ভবনে এ দিন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (২ নম্বর বেঞ্চ) কুমকুম সিংহের আদালতে ওই চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। আদালতের একটি সূত্রের খবর, চার্জশিটে জালিয়াতি, তহবিল তছরুপ ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে ঊষাদেবী ও অন্যদের বিরুদ্ধে। চার্জশিটের সঙ্গে বহু নথির অনুলিপিও আদলতে জমা পড়েছে।

এই ব্যাপারে এ দিন ঊষাদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি এমন কিছু জানি না। আপনাদের কাছেই প্রথম শুনলাম।’’ তবে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। আসলে প্রতিহিংসার রাজনীতি তিনিই করছেন! এক বার ব্যর্থ হলে বারবার চেষ্টা হচ্ছে। এই ভাবেই আমাদের দলের রাজ্য সম্পাদকের স্ত্রী এবং তিনি যে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত, তাদের নিশানা করা হয়েছে।’’

Advertisement

সূর্যবাবুর স্ত্রীর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রকের অধীন জাতীয় এড্স প্রতিরোধ ও গবেষণা সংস্থা (ন্যাকো) টাকা পা‌ঠালেও তা উপযুক্ত খাতে খরচ না করে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনাটি যখনকার, তখন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন সূর্যবাবু। সেই সময়ে রাজ্য এড্স প্রতিরোধ ও গবেষণা সংস্থায় (স্যাক্স) অভিযোগ ওঠে, পশ্চিমবঙ্গে এড্স প্রতিরোধ ও গবেষণার ব্যাপারে জিনিসপত্র কেনার জন্য কেন্দ্রের পাঠানো বিপুল পরিমাণ টাকা নয়ছয় হয়েছে। ক্ষমতায় এসেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য দফতরে একটি কমিটি তৈরি করেন। ওই কমিটির অনুসন্ধানে কয়েকটি সংস্থার নাম উঠে আসে, যার অন্যতম ঊষাদেবীর সংস্থাটি। অভিযোগ উঠেছিল স্বাস্থ্য দফতরের তদানীন্তন কয়েক জন আধিকারিকের বিরুদ্ধেও। প্রসঙ্গত, তৃণমূল জমানার দু’টি পর্যায়েই স্বাস্থ্য দফতর রয়েছে মমতার নিজের হাতে।

সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যবাবুর স্ত্রীর সংস্থার বিরুদ্ধে ২০১৫-র ৯ মার্চ করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন শাখা তদন্তে নামে। তার বছর খানেক আগেই স্যাক্স-এর প্রকল্প অধিকর্তা দুর্নীতি দমন শাখার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে ওই সংস্থার দফতর ও আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে বহু বার তল্লাশি চালানো হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের নামে ভবানী ভবনে ডেকে পাঠিয়ে ঊষাদেবীদের বসিয়ে রেখে ‘হেনস্থা’ করা হতো বলেও পাল্টা অভিযোগ উঠেছিল এক সময়। শেষ পর্যন্ত আদালতে চার্জশিট পেশ করল দুর্নীতি দমন শাখা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement