শালবনির নাবালিকা গণধর্ষণে চার্জশিট জমা চার দিনেই

আদিবাসী কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের মাত্র চার দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দিল পুলিশ। শালবনির ওই ঘটনাটিতে এত দ্রুত চার্জশিট দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ কার্যত নজির গড়েছে বলেই পুলিশ মহলের বক্তব্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৫ ০৪:৪১
Share:

আদিবাসী কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের মাত্র চার দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দিল পুলিশ। শালবনির ওই ঘটনাটিতে এত দ্রুত চার্জশিট দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ কার্যত নজির গড়েছে বলেই পুলিশ মহলের বক্তব্য। রাজ্য পুলিশের আইজি (আইন-শৃঙ্খলা) অনুজ শর্মার কথায়, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের অভাবনীয় সাফল্য এটা।’’

Advertisement

সাধারণত, যে কোনও মামলায় ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়ার কথা। না হলে ধৃতেরা জামিন পাওয়ার পথ সহজ হয়। তবে বহু ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরনোর পরেও পুলিশ চার্জশিট দিতে পারে না। ওঠে গড়িমসির অভিযোগ। ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে তদন্ত ঠিকঠাক এগোলে চার্জশিট জমা দিতে সাধারণত মাস দুয়েক লেগে যায়। সে দিক থেকে শালবনির ঘটনাটি অবশ্যই ব্যতিক্রমী। গত শুক্রবারের ওই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল শনিবার। আর বুধবার মেদিনীপুর আদালতে অভিযুক্ত ছ’জনের নামে চার্জশিট জমা পড়ে।

কী করে এত দ্রুত চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হল?

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, অন্য ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতেই কিছুটা সময় গড়িয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ছ’জন ধরা পড়ে যায়। অভিযোগকারিণী কিশোরী তাদের চিহ্নিতও করে ফেলে। ফলে, কাজ সহজ হয়ে যায়। জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে খুব তাড়াতাড়ি তদন্ত এগোনো গিয়েছে।”

শালবনি থানার শালডহরা গ্রামে গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার সন্ধ্যায়। বছর ষোলোর ওই আদিবাসী কিশোরী খুড়তুতো বোনকে নিয়ে বাড়ির পাশের জঙ্গলে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিল। অভিযোগ, ছ’জন যুবক জোর করে ওই দুই কিশোরীকে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। চিত্‌কার শুরু করলে কিশোরীদের মুখে কাপড় চাপা দেওয়া হয়। তাদের মারধরও করা হয়। খুড়তুতো বোনটি জ্ঞান হারায়। এরপরই তার জ্যাঠতুতো দিদিকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে জানা গিয়েছে ধর্ষণ করেছিল চার যুবক। বাকি দু’জন ছিল পাহারায়।

রাতে জ্ঞান ফিরলে ওই খুড়তুতো বোন নিজের মোবাইল থেকে ফোন করে পরিজনদের সব জানায়। এরপর গ্রামের লোকজন দল বেঁধে ওই জঙ্গলে যায়। অভিযুক্ত ছ’জন তখনও সেখানে ছিল। পালাতে গেলে দু’জন গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ে যায়। তবে বাকি চারজন পালায়। শনিবার পুলিশের কাছে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। এরপর পুলিশ বাকি চারজন অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করে। ধর্ষিতা কিশোরীকে প্রথমে শালবনি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়।

আদালতের নির্দেশে গত মঙ্গলবার মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ধৃতদের টিআই প্যারেড হয়। তাদের চিহ্নিত করে ধর্ষিতা কিশোরী। কিশোরীর গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এ ক্ষেত্রে তিনজন সাক্ষীরও গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে মেদিনীপুর আদালতে। সব মিলিয়ে দ্রুত তদন্ত সেরে চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এ বার
দ্রুত অভিযুক্তদের দোষ প্রমাণ এবং সাজা ঘোষণা হয়ে যাবে বলেই মনে করছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement