Bengal Coal Scam Case

এখনও কেন তদন্ত শেষ হল না? কয়লা মামলায় সিবিআইকে প্রশ্ন কোর্টের, মঙ্গলে হল না চার্জ গঠন

এর আগে কয়লা পাচার মামলায় দু’টি চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিবিআই। দু’টি চার্জশিটে মোট ৪৩ জন অভিযুক্তের নাম রয়েছে। মঙ্গলবার এই মামলায় চার্জ গঠন হওয়ার কথা ছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ১১:১৭
Share:

আদালতে হাজির সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক উমেশ কুমার। —নিজস্ব চিত্র

আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে কয়লা পাচার মামলায় চূড়ান্ত চার্জ গঠন হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু নানাবিধ কারণে তা হয়নি। বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আগামী ৩ জুলাই চার্জ গঠনের পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই দিন চার্জশিটে নাম থাকা সব অভিযুক্তকে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে।

Advertisement

এর আগে কয়লা পাচার মামলায় দু’টি চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিবিআই। দু’টি চার্জশিটে মোট ৪৩ জন অভিযুক্তের নাম রয়েছে। মঙ্গলবার নির্ধারিত সময়ে আদালত চত্বরে এসে উপস্থিত হন সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক উমেশকুমার সিংহ। হাজির হন বেশ কয়েক জন অভিযুক্তের আইনজীবীও। কিন্তু ওই আইনজীবীদের কয়েক জন আদালতে দাবি করেন, কয়লা পাচার মামলায় তদন্ত সংক্রান্ত কোনও নথি হাতে পাননি তাঁরা। তার পরই বিচারক ওই আইনজীবীদের হাতে মঙ্গলবারই নথি তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

মঙ্গলবার শারীরিক কারণে আদালতে গরহাজির ছিলেন দুই অভিযুক্ত জয়দেব মণ্ডল এবং নারায়ণ নন্দা। নারায়ণের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ জানান, তাঁর মক্কেল অসুস্থ। তবে বিশেষ প্রয়োজনে তাঁকে গাড়িতে চাপিয়ে আদালতে নিয়ে আসা সম্ভব। জয়দেবের বিরুদ্ধে আবার এক ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সিআইডির সেই মামলায় এখনও গ্রেফতার হননি তিনি। কলকাতা হাই কোর্টও তাঁকে কোনও ‘রক্ষাকবচ’ দেয়নি। মঙ্গলবার বিশেষ আদালতে এই প্রসঙ্গ উঠলে বিচারক জানান, দু’টি মামলা আলাদা। তাই দু’টি বিষয়কে এক করে দেখা ঠিক হবে না। সিবিআইয়ের কৌঁসুলি আদালতে এ-ও জানান যে, এই মামলায় আরও কয়েক জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে তারা আদালতে একটি অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেবে। কিন্তু এত দিন পর কেন এই চার্জশিট দেওয়ার প্রয়োজন পড়ছে, সিবিআই এত দিন ধরে কী করছিল, এই সব প্রশ্ন তুলে তদন্তকারী সংস্থাটিকে ভর্ৎসনা করেন বিশেষ আদালতের বিচারক।

Advertisement

গত মঙ্গলবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন কয়লা পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালা। শর্তসাপেক্ষে তাঁকে জামিন দেয় আদালত। জামিনের শর্ত হিসাবে আদালত জানিয়েছে, লালাকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। মঙ্গলবার লালা আইনজীবীকে নিয়ে আদালতে হাজির ছিলেন। তবে এই মামলার আর এক অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র এখনও ‘পলাতক’। তাঁর ভাই বিকাশ মিশ্র অবশ্য মঙ্গলবার আদালতে হাজির ছিলেন। প্রসঙ্গত, এই মামলায় লালা, বিনয়-সহ মোট ৪৩ জন অভিযুক্ত ছাড়া বেশ কয়েকটি সংস্থাও অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছে। এগুলির মধ্যে আবার এমন একটি সংস্থা রয়েছে, যাকে হাই কোর্ট দেউলিয়া বলে ঘোষণা করেছে।

২০২০ সালে কয়লা পাচার মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। রাজ্যে রেলের বিভিন্ন সাইডিং এলাকা থেকে কয়লা চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রথমে আয়কর দফতর, তার পরে সিবিআই কয়লাকাণ্ডের তদন্তে নামে। লালার বাড়ি, অফিসে তল্লাশি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত শুরু হয়। লালার সঙ্গী বলে পরিচিত গুরুপদ মাজি-সহ চার জন গ্রেফতার হন। তিন জন জামিন পেলেও গুরুপদ এখনও ইডির মামলায় দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। সাম্প্রতিক কালে গরু এবং কয়লা পাচার মামলা বার বার শিরোনামে এসেছে। এর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে রাজনীতিকদের। কয়লা পাচারকাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়লা পাচার মামলায় নাম জড়ায় রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকেরও। অন্য দিকে, গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement