State News

শিলিগুড়িতে পুর বৈঠকে হট্টগোল, মেয়র, বিরোধী নেতা-সহ হাসপাতালে ৩

পুরসভার ঘরে-বাইরে লড়াইটা চলছিলই। এ বার বোর্ড মিটিংয়ে বাদানুবাদ, কাগজপত্র, ব্যাগ ছোড়াছুড়ির জেরে অসুস্থ হয়ে মেয়র, বিরোধী দলনেতা-সহ একযোগে তিন জন ভর্তি হলেন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। শনিবার বিকেল ৫টা নাগাদ শিলিগুড়ি পুরসভার ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৭ ২১:৪২
Share:

শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

পুরসভার ঘরে-বাইরে লড়াইটা চলছিলই। এ বার বোর্ড মিটিংয়ে বাদানুবাদ, কাগজপত্র, ব্যাগ ছোড়াছুড়ির জেরে অসুস্থ হয়ে মেয়র, বিরোধী দলনেতা-সহ একযোগে তিন জন ভর্তি হলেন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। শনিবার বিকেল ৫টা নাগাদ শিলিগুড়ি পুরসভার ঘটনা।

Advertisement

শিলিগুড়ির মেয়র তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার ব্যাগ ছুড়ে মারায় তিনি মাথায় আঘাত পাওয়ায় চিকিৎসক তাঁকে ভর্তি করান। রঞ্জনবাবুর দাবি, তিনি ব্যাগ ছুড়ে মারেননি। তাঁর অভিযোগ, মেয়র রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করে উত্তেজনা ছড়ালে গোলমালের সময়ে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। বোর্ড মিটিংয়ের পরে বুকে ব্যথা অনুভব করলে হাসপাতালে যান রঞ্জনবাবু। তখনই চিকিৎসক তাঁকেও ভর্তি করান। ঘটনাচক্রে, হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তৃণমূল কাউন্সিলর নান্টু পালকেও। বোর্ড মিটিংয়ে গোলমালের পরে তাঁরও বুকে ব্যথা হয়েছে। তবে কোনও পক্ষ পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়নি। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র বলেছেন, ‘‘তৃণমূল কাউন্সিলরদের আচার-আচরণ মানুষ দেখছেন। মানুষই প্রতিবাদ করবেন।’’

এই ঘটনার পরে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এক বিবৃতিতে বলেন, শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের ওপরে শনিবার তৃণমূলের ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা করছে বামফ্রন্ট। রাজ্যের সর্বত্রই বিরোধীদের ওপরে শাসক দলের হামলা চলছে। গত ছ’বছর ধরে গণতন্ত্রের ওপরে এই আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। এর আগেও শিলিগুড়ি পুরসভায় তাণ্ডব করেছে তৃণমূল। এখন পুরসভার অধিবেশনের মধ্যেই এ ভাবে বর্বরোচিত হামলা চালানো হল। আহত অবস্থায় অশোক ভট্টাচার্যকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন

বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হাওড়ার শিবপুর

যদিও রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেবের কটাক্ষ, মেয়র নাটক করছেন। তৃণমূল জেলা সভাপতির অভিযোগ, ‘‘শহরে জঞ্জাল-নিকাশি পুরোপুরি বেহাল। রাস্তা সারানো হচ্ছে না। বেআইনি পার্কিংয়ে যানজটে জেরবার শহরবাসী। সে সব নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েই নজর ঘোরাতে মেয়র উত্তেজক মন্তব্য করে ফায়দা তুলতে চেষ্টা করছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এ সব নাটক মানুষ ধরে ফেলেছেন।’’

ঘটনার শুরু বোর্ড মিটিংয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর নিখিল সাহনির একটি প্রস্তাব ঘিরে। তিনি ওয়ার্ডে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে বরোগুলিতে ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ চান। মেয়র জানান, সাংস্কৃতিক চর্চা বৃদ্ধি করতে বরাদ্দ দেওয়ায় নীতির বিরুদ্ধে নন তিনি। এর পরে মেয়র তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘তৃণমূল জমানায় পশ্চিমবঙ্গে সংস্কৃতি বিপন্ন। শিক্ষা বিপন্ন, ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে।’’ তখনই বিরোধীরা চেঁচামেচি করে কাগজপত্র ছুড়তে শুরু করেন। চারদিকে এই ছোড়াছুড়ি চলে। তখনই একটি কাঁধে ঝোলানোর ছোট চামড়ার ব্যাগ অশোকবাবুর মাথায় লাগে বলে অভিযোগ। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কংগ্রেস-বিজেপি কাউন্সিলররা তখন বেরিয়ে যান। বোর্ড মিটিং শেষ হলে তৃণমূল কাউন্সিলররা স্লোগান দিয়ে কক্ষ ছাড়েন।

এর পরে অশোকবাবু সাংবাদিক বৈঠক করেন। তা শেষ হওয়ার পরে তিনি অসুস্থ বোধ করছেন বলায় তাঁকে জেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানান, মাথায় আঘাতের কোনও প্রমাণ মেলেনি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ষাটোর্ধ্ব অশোকবাবুর রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকায় ভর্তি করে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। রঞ্জনবাবু ও নান্টুবাবুকে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement