বন্দিশালায় স্বাদবদল, বাড়তি পদ আমিষের

এত দিন আদাবাটা-পেঁয়াজেই সাঙ্গ হত মাংসের ঝোলের রান্না। একঘেয়ে সেই ঝোল নিয়মিত খেয়ে যেতেন বন্দিরা। স্বাদবদলের দাবি তাঁরা যে কখনও-সখনও তোলেননি, তা নয়।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০২:২৩
Share:

এত দিন আদাবাটা-পেঁয়াজেই সাঙ্গ হত মাংসের ঝোলের রান্না। একঘেয়ে সেই ঝোল নিয়মিত খেয়ে যেতেন বন্দিরা। স্বাদবদলের দাবি তাঁরা যে কখনও-সখনও তোলেননি, তা নয়। তাঁদের জন্য এ বার স্বাদবদলের বন্দোবস্ত করছে কারা দফতর। আদাবাটা-পেঁয়াজ তো থাকছেই। সেই সঙ্গে মাংসে এ বার পড়বে গরম মশলা-তেজপাতা। লৌহকপাটের মধ্যেও রসনা তৃপ্ত হবে আবাসিকদের।

Advertisement

আদা-পেঁয়াজ এবং ধনে-জিরে সহযোগেই জেলের মধ্যাহ্নভোজ বা নৈশাহারের যে-কোনও পদ রান্না করা হয়। তা সে মাংসের ঝোল, মাছের ঝোল, ডিম, সয়াবিন, নিরামিষ খাবার— যা-ই হোক না কেন! এ বার তার সঙ্গে সংযোজিত হচ্ছে গরম মশলা-তেজপাতা। প্রয়োজনে জেলের কোনও কোনও পদে পাঁচফোড়নও ব্যবহার করা হতে পারে। সব কিছু ঠিক থাকলে এ বছর পুজোর আগেই নতুন মশলা সহযোগে তৈরি নানা রান্নার স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন বন্দিরা। সেন্ট্রাল জেল, জেলা, মহকুমা, মুক্ত কারাগার মিলিয়ে রাজ্যে এখন সংশোধনাগারের সংখ্যা ৬০। বন্দি রয়েছেন ২১,৮৩৭ জন।

শুধু মশলা ব্যবহার করেই রান্নার স্বাদবদল নয়। জেলের আবাসিকদের পাতে এ বার থেকে মাছ-মাংস-ডিমও পড়তে পারে বেশি করে। তেমনই আলোচনা চলছে কারা দফতরে। বন্দিদের জন্য সপ্তাহে এক দিন করে মাছ, মাংস, ডিম, সয়াবিন বরাদ্দ থাকে। বাকি তিন দিন তাঁদের জন্য ডাল-তরকারি বা অন্য কিছু নিরামিষ খাবার থাকে। এ বার সেই খাবার পরিমাণেও বাড়তে চলেছে।

Advertisement

বন্দিদের শরীর ঠিক রাখার বিষয়টিকেও বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছে কারা দফতর। তাই তাঁদের যাতে মরসুমি ফল দেওয়া যায়, সে বিষয়েও আলোচনা চলছে কারা দফতরে। ২০০৭-’০৮ সালে রাজ্যের জেলগুলিকে সংশোধনাগারে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়। ২০০৭ সালের শেষ লগ্নে কারা দফতরের পদস্থ কর্তা এবং স্বাস্থ্য ও পুষ্টি-বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গড়া একটি কমিটি খাবারের মান ও মাত্রা স্থির করেছিল। গত ১০ বছর ধরে তেমনই চলে আসছিল। সম্প্রতি খাবারের গুণগত মান এবং ক্যালরি ঠিকমতো আছে কি না, তা পর্যালোচনা করার জন্য ১৫ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করেছে কারা দফতর। তারা ডায়েট নিয়েও আলোচনা করেছে। তার পরেই আবাসিকদের খাবারের গুণমানে বদল আসতে চলেছে বলে কারা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এক কারাকর্তা বলেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছুর বদল দরকার হয়। টানা ১০ বছর সংশোধনাগারে এক ধরনের খাবার খাচ্ছিলেন আবাসিকেরা। এ বার তাতে বদল আসছে।’’

দফতরের পদস্থ কর্তা এবং জেল সুপারদের নিয়ে এক বৈঠকে আবাসিকদের খাবারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। খাবারের অপচয় বন্ধে নজর দিতেও জেলকে নির্দেশ দিয়েছে কারা দফতর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement