Akhil Giri

‘দাওয়াই চাই না, ভাল কথা বললেই চাঙ্গা হন কর্মীরা’, অখিলের নিন্দায় মন্ত্রী চন্দ্রিমা

রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে মন্তব্যের জেরে বিতর্ক তৈরি হতেই অখিলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে শাসকদল তৃণমূল। আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দল ওই মন্তব্যকে সমর্থন করে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরশুড়া শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২২ ১৮:১৮
Share:

অখিল গিরি এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন আর এক মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। অখিলের মন্তব্যের বিরোধিতা করে চন্দ্রিমা স্পষ্ট জানান, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করতে কোনও ‘দাওয়াই’ দেওয়ার দরকার পড়ে না। কিছু ভাল কথা বললেই তাঁদের উজ্জীবিত করা সম্ভব বলে মন্তব্য করলেন চন্দ্রিমা। রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে মন্তব্যের জেরে বিতর্ক তৈরি হতেই অখিলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে শাসকদল তৃণমূল। আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দল ওই মন্তব্যকে সমর্থন করে না। প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন অখিলও।

Advertisement

শনিবার হুগলির পুরশুড়ার শ্যামপুরে একটি দলীয় সভায় হাজির হন চন্দ্রিমা। দলীয় কর্মীদের নিয়ে ‘গ্রামে চলো’ কর্মসূচিতেও অংশ নেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘কুরুচিকর মন্তব্য যিনি করেছেন, তিনি নিজে ক্ষমাও চেয়েছেন। তাঁর মন্তব্যকেও আমরা সমর্থন করি না। দলের কর্মীদের কোনও দাওয়াই দেওয়ার দরকার নেই। ওঁরা এমনিই সুস্থ।’’

শুক্রবার নন্দীগ্রামে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছ অখিলের বিরুদ্ধে। অখিলের ওই সভার একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। সেটির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও ওই সভায় হাজির রয়েছেন। তাঁর সামনেই অখিলকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?’’

Advertisement

ওই ভিডিয়োকে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে ‘আদিবাসী বিরোধী’ তকমা দিতে শুরু করে বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দলের সর্বভারতীয় আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় টুইটারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হন। সুকান্তের অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ‘আদিবাসী বিরোধী’। মন্ত্রীর ওই বক্তৃতার ভিডিয়ো পোস্ট করে মালবীয় টুইটারে লেখেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য অখিল গিরি বলছেন, ‘আমরা রূপের বিচার করি না। কিন্তু তোমাদের রাষ্ট্রপতি কেমন দেখতে? মুখ্যমন্ত্রী (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সব সময়েই জনজাতি বিরোধী। তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করেননি। এর পর এমন ঘটনা, লজ্জাজনক!”

মন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে স্বাভাবিক ভাবেই বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে তৃণমূল। শাসকদলের পক্ষ থেকে একটি টুইট করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে। লেখা হয়েছে, ‘‘ভারতের মাননীয় রাষ্ট্রপতি, শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমাদের পরম শ্রদ্ধা। আমাদের দলের বিধায়কের করা দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করি এবং স্পষ্ট করে জানাতে চাই যে, অখিল গিরির মন্তব্যের আমরা তীব্র বিরোধিতাও করি।’’

পরে দুঃখপ্রকাশ করেন অখিলও। তিনি বলেন, ‘‘এক মাস আগে থেকে শুভেন্দু অধিকারী বিভিন্ন জায়গায় আমার সম্পর্কে কটূক্তি করেছেন। আমি বয়স্ক মানুষ। আমার মনে ক্রোধ জন্মেছিল। রাষ্ট্রপতি মহোদয়াকে আমি কোনও অসম্মান করিনি। তাঁর প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। যে কথা আমার মুখ থেকে বেরিয়েছে, তা ক্রোধের বশে বেরিয়ে এসেছে। আমি অনুতপ্ত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement