হেলাপুকুর ধারের প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র।
মহা ধূমধাম সহকারে চন্দননগরে চলছে জগদ্ধাত্রীর আরাধনা। শুক্রবার ছিল অষ্টমী। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে, সরকারি বিধি নিষেধের মধ্যেই পাড়ায় পাড়ায় চলছে জগদ্ধাত্রী পুজো। দর্শনার্থীদের প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘোরার ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ জারি থাকলেও, তা মেনে চলার ছবি বিরল।
সাধারণত অন্যান্য বছরে যেমন ভিড় হয়, এ বার সপ্তমীতে তা হয়নি, দাবি পুজো উদ্যোক্তাদের। কিন্তু উল্টো ছবি অষ্টমীতে। সন্ধায় তালডাঙা থেকে সরষেপাড়া, বাগবাজার থেকে জ্যোতির মোড় বা জিটি রোড অপেক্ষাকৃত ফাঁকা থাকলেও, চন্দননগর ও মানকুন্ডু স্টেশন রোডে গিজগিজে ভিড়। পুজো উদ্যোক্তা দেবব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত বছর করোনায় পুজো সে ভাবে হয়নি। করোনার কথা ভেবে প্রতিমা দর্শনে উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। তবে রাত বাড়লে দর্শক বাড়ছে আর চোখে পড়ছে করোনা বিধি অমান্য করার ছবি। যাঁরা প্রতিমা দর্শন করছেন অনেকের মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি।’’
বালাই নেই মাস্কের!
গত মার্চ মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় চন্দননগরের বাসিন্দা সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর বন্ধুরা মধ্যাঞ্চল পুজো মণ্ডপের সামনে করোনা সচেতনতা নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। তাঁদেরই একজন, অভিজিৎ ধাড়া বলেন, ‘‘করোনা চলছে। ঝুঁকি আছে জেনেও মানুষকে অসাবধান হতে দেখা যাচ্ছে। তাই চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোয় মাস্ক বিতরণের পাশাপাশি অক্সিজেন সরবরাহকারী, অ্যাম্বুল্যান্স, হাসপাতালের নাম ও ফোন নম্বর লিখে লিফলেট বিলি করা হচ্ছে।’’
পুজোর উৎসব যাতে অন্ধকারে পরিণত না হয়, তার জন্য প্রচার চালাচ্ছে দৈবকপাড়া বারোয়ারি। পুজোর মূল উদ্যোক্তা মহিলারা মাইক হাতে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছেন। মাস্ক না পরলে মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছেন। শারীরিক দূরত্ব মেনে ঠাকুর দেখতে বলছেন। পুজোতে তাঁদের এই করোনা সচেতনতার কাজের স্বীকৃতিও মিলেছে। শ্রীরামপুরের ব্যবসায়ী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তার মা মুক্তি দেবীর স্মৃতিতে করোনার বিরুদ্ধে এমন কাজকে পুরস্কৃত করেন। দৈবকপাড়ার সদস্য মৌমি ঘোষ বলেন, ‘‘করোনা এখনও চলে যায়নি তাই সাবধান থাকতে হবে। যাঁরা প্রতিমা দর্শনে আসছেন, তাঁদের মাস্ক আবশ্যক। অনেকেই মাস্ক পরেননি বা পকেটে নিয়ে ঘুরছেন, তাঁদের মাস্ক পরানো হচ্ছে।’’