জামালপুরের নবগ্রামে জাতীয় তপসিলি জাতি কমিশনের প্রতিনিধিরা।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে ভোট পরবর্তী হিংসায় নিহত মহিলাকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করলেন জাতীয় তপসিলি জাতি কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় সাম্পলা।
জামালপুর থানার নবগ্রামের ষষ্ঠিতলার বিজেপি কর্মী আশিস ক্ষেত্রপালের মা কাকলি গত ৩ মে ভোট পরবর্তী হিংসায় খুন হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় তপসিলি জাতি কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় এবং ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার নবগ্রামে এসেছিলেন। কিন্তু এলাকায় আতঙ্কের আবহ থাকায় তাঁর নিহতের পরিজন কিংবা প্রতিবেশীদের কথা বলতে পারেননি বলে অভিযোগ।
বিজয় জানান, পাড়ার কোনও বাড়িতেই তাঁরা কাউকে দেখতে পাননি। এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘ধর্ষণের পরেই ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে।’’ উপদ্রত এলাকা পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসনকে জাতীয় তপসিলি কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় নির্দেশ দেন, ৭ দিনের মধ্যে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে হবে। মারধর আর ভাঙচুরে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টা নাগাদ কড়া পুলিশি পাহারায় কেন্দ্রীয় তপসিলি জাতি কমিশনের দুই কর্তা নবগ্রামের ষষ্ঠীতলায় পৌঁছান। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন-সহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের অন্যান্য কর্তারাও কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নবগ্রামে যান। ঘটনাস্থল ঘুরে কেন্দ্রীয় তপসিলি জাতি কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কাকলি ক্ষেত্রপালের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে অভিযোগ পেয়েই আমরা নবগ্রামে এসেছি। কিন্তু নিহতের পরিবার কিংবা তাঁদের প্রতিবেশী কাউকে বড়িতে পেলাম না। এর থেকেই স্পষ্ট, নবগ্রামে এখনও আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে।’’
গত ৩ মে ভোট পরবর্তী হিংসায় নবগ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী বিভাস বাগও খুন হন। তাঁর বাড়িতে না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিজয় জানান, যাঁদের বিষয়ে কমিশনে অভিযোগ এসেছে, শুধু তাঁদের বাড়িতেই তাঁরা যাচ্ছেন এবং খোঁজখবর নিচ্ছেন। নবগ্রামের পর মিলিকপাড়ায় যান বিজয়রা। সেখানে ভোট পরবর্তী সংঘর্ষে ভেঙে দেওয়া ঘর ও দোকান ভাঙা যায় সেখানে ঘুরে দেখেন।
সে দিনের হিংসার ঘটনার কাকলির স্বামী অনিল ক্ষেত্রপাল গুরুতর জখম হয়েছিলেন। তিনি এখনও ভর্তি আছেন বর্ধমানের একটি নাসিংহোমে। সেখানে গিয়েও চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে খোঁজখবর নেন কমিশনের দুই শীর্ষ প্রতিনিধি। তাঁদের প্রশ্ন করা হয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, কেন কমিশনের প্রতিনিধিরা বেছে বেছে শুধুমাত্র বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি যাচ্ছেন। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজয়ের জবাব, ‘‘কে, কী বলছেন জানি না। তবে কাকলি ক্ষেত্রপালের বাড়ি যাওয়াটা রাজনীতির ঊর্ধ্বে। এ বিষয়ে যিনি মন্তব্য করবেন, তিনি নিশ্চয়ই সাংবিধানিক মর্যাদা রেখেই বলবেন।’’