কেন্দ্র ফের ডিএ বাড়াতেই ফিরে এল পুরনো ব্যবধান

সরকারি কর্মীদের জন্য মঙ্গলবার আরও এক কিস্তি মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) ঘোষণা করল কেন্দ্র। আর তার জেরে ফের চাপ বাড়ল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপরে। কারণ, রাজ্য সর্বশেষ কিস্তিতে কর্মীদের ৭% বাড়তি ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। আর এ দিন কেন্দ্র ঘোষণা করেছে ৬ শতাংশ। ফলে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ডিএ-র ব্যবধান রয়ে গেল প্রায় একই। কী ভাবে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০০
Share:

সরকারি কর্মীদের জন্য মঙ্গলবার আরও এক কিস্তি মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) ঘোষণা করল কেন্দ্র। আর তার জেরে ফের চাপ বাড়ল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপরে। কারণ, রাজ্য সর্বশেষ কিস্তিতে কর্মীদের ৭% বাড়তি ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। আর এ দিন কেন্দ্র ঘোষণা করেছে ৬ শতাংশ। ফলে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ডিএ-র ব্যবধান রয়ে গেল প্রায় একই। কী ভাবে?

Advertisement

গত বছর ডিসেম্বরে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ-র ব্যবধান ছিল ৪৯%। ক্রমাগত চাপের মুখে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার ৭ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর পর সেই ব্যবধান কমে দাঁড়িয়েছিল ৪২ শতাংশে। রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বেড়ে হয়েছিল ৬৫ শতাংশ। কিন্তু এ দিনের বৃদ্ধির পর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ দাঁড়িয়েছে ১১৩ শতাংশে। ফলে ব্যবধান সেই ডিসেম্বরের মতোই— ৪৮ শতাংশ।

প্রত্যাশিত ভাবেই এ নিয়ে রাজ্যের বিরোধী কর্মী সংগঠনের নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার মুখে আর্থিক সঙ্কটের কথা বলে। অথচ মেলা-খেলা-খয়রাতিতে ফি বছর কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করে। শুধু কর্মীদের ন্যায্য পাওয়া দিতেই কি অর্থের টানাটানি! সিপিএম প্রভাবিত কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা মনোজ গুহ বলেন, ‘‘সরকার তো শুনেছি কেন্দ্রের কাছ থেকে অনেক টাকা পেয়েছে। কিন্তু যারা আসলে সরকারটা চালায়, তাদের জন্যই পয়সা নেই। সত্তর দশকেও আমরা এমন সরকার দেখিনি।’’

Advertisement

আইএনটিইউসি অনুমোদিত সরকারি কর্মী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ-এর মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন, ধাপে ধাপে কর্মচারীদের বকেয়া মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু বাস্তবে ব্যবধান ক্রমশ বেড়েই চলেছে। কেন্দ্রের সঙ্গে ব্যবধান কমাতে বাম আমলে বছরে তিন কিস্তি ডিএ-ও দেওয়া হয়েছে।’’ যদিও শাসক দলের অনুগামী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক সৌম্য বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘গত মাসেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে কেন্দ্রেরও দায়িত্ব রয়েছে।’’

রাজ্যের এক কর্তা ব্যাখ্যা দিলেন, সাধারণ নিয়মে বছরে দু’বার ডিএ ঘোষণা করে কেন্দ্র। এ রাজ্যেও বাম আমলে সেই ধারা বজায় ছিল। কিন্তু তৃণমূল সরকার কখনওই বছরে এক কিস্তির বেশি ডিএ দেয়নি। ফলে দিন যত এগিয়েছে, ব্যবধান বেড়েছে। প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, রাজ্যের যা আর্থিক পরিস্থিতি, তাতে আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে একটির বেশি কিস্তি ডিএ দেওয়া কঠিন। তবে নবান্নের শীর্ষ মহলের ধারণা, ভোটের আগে দু’কিস্তি ডিএ ঘোষণা করেই কর্মীদের ক্ষোভে প্রলেপ দিতে চাইবেন মমতা। কিন্তু তাতে ব্যবধান বিশেষ কমবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement