ফাইল চিত্র।
গাঁধী জয়ন্তী কবে থেকে জাতীয় ছুটি হল, তথ্য নেই কেন্দ্রের কাছে। সরকারি ভাবে কবে থেকে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীকে ‘জাতির জনক’ ঘোষণা করা হয়, নেই সে তথ্যও। সম্প্রতি দুর্গাপুরের এক বাসিন্দার ‘তথ্য জানার অধিকার’ আইনে (আরটিআই) পাঠানো চিঠির জবাবে এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্র।
বছর ছয়েক আগে, লখনউয়ের বছর দশেকের স্কুলছাত্রী ঐশ্বর্য পরাশরও ‘আরটিআই’ করে জানতে চেয়েছিল, গাঁধী কবে থেকে ‘জাতির জনক’ উপাধি পান? জবাবে প্রধানমন্ত্রীর দফতর (পিএমও), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং জাতীয় সংরক্ষণাগার জানায়, এ বিষয়ে কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। দুর্গাপুরের বাসিন্দা সন্দীপকুমার চক্রবর্তীর আরটিআই-এর জবাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, গাঁধীকে ‘জাতির জনক’ ঘোষণা করে সরকারের তরফে কোনও আইন, নির্দেশিকা বা ‘রেজোলিউশন’ পাশ করানো হয়নি।
দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের বাসিন্দা আইনজীবী সন্দীপবাবু ২১ মে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ স্কুলশিক্ষা ও সাক্ষরতা বিভাগে পাঠানো চিঠিতে জানান, ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং’-এর (এনসিইআরটি) বইয়ে গাঁধীকে ‘জাতির জনক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কবে কেন্দ্রীয় সরকার গাঁধীকে এই উপাধি দিয়েছিল, প্রশ্ন তোলেন তিনি। এ ছাড়া, কবে থেকে গাঁধী জয়ন্তী জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষিত হয়েছে, তা-ও জানতে চান। দেখতে চান সে সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিও।
২৮ জুন তাঁর চিঠিটি স্কুলশিক্ষা ও সাক্ষরতা বিভাগ পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। সেখান থেকে চিঠিটি যায় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীন ‘গাঁধী স্মৃতি ও দর্শন সমিতি’র কাছে। সম্প্রতি সমিতির তরফে সন্দীপবাবুকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, ‘ইন্টারনেট’ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৫ সালে গাঁধীকে ‘মহাত্মা’ বলে উল্লেখ করেন। তবে তাঁকে ‘জাতির জনক’ উপাধি দিতে সরকারের তরফে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি, আইন বা ‘রেজোলিউশন’ পাশ করানো হয়নি।
সন্দীপবাবু জানান, এনসিইআরটি-র তরফেও চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, দু’টি বিষয়েই কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। গাঁধী জয়ন্তীতে জাতীয় ছুটির বিষয়ে ‘পার্সোনেল, পিজি অ্যান্ড পেনশনস’ মন্ত্রক জানিয়েছে, এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো তথ্য তাদের কাছে নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে যদি এ বিষয়ে কোনও তথ্য থাকে, সে কথা ভেবে চিঠিটি তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে তাঁকে। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘এত দিন ধরে যা চলে আসছে তার গোড়াটা জানেন না কেউ। ভাবুন কাণ্ড!’’