অন্ডাল ধুঁকছে, তবু বিমানবন্দর বার্নপুরে

মাত্র চল্লিশ কিলোমিটারের ব্যবধানে দু’টি বিমানবন্দর। একটি চালু হয়েছে প্রায় দু’বছর। যাত্রীর অভাবে সেখান থেকে দিনে একটি মাত্র উড়ান চলে। তবু তার ঘাড়ের কাছে ১০০ কোটি টাকা খরচ করে আরও একটি বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার!

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৫
Share:

মাত্র চল্লিশ কিলোমিটারের ব্যবধানে দু’টি বিমানবন্দর। একটি চালু হয়েছে প্রায় দু’বছর। যাত্রীর অভাবে সেখান থেকে দিনে একটি মাত্র উড়ান চলে। তবু তার ঘাড়ের কাছে ১০০ কোটি টাকা খরচ করে আরও একটি বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার!

Advertisement

প্রথমটি অন্ডাল, দ্বিতীয়টি বার্নপুর।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বার্নপুরে একটি ১২২০ মিটারের ছোট রানওয়ে রয়েছে। সেটা দিয়ে ন’মাসে-ছ’মাসে সেল-এর ছোট বিমান ওঠানামা করে। কোনও টার্মিনাল বিল্ডিং বা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল-এর পরিকাঠামো নেই। সেটির পরিকাঠামো গড়ার পাশাপাশি নিয়মিত অফিসার ও নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করতে হবে। সব মিলিয়ে ১০০ কোটির ধাক্কা। প্রাথমিক খরচ অবশ্য পাঁচ কোটি।

Advertisement

প্রত্যাশিত ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, অন্ডাল ‘ফ্লপ’ জেনেও কেন তার কাছাকাছি আরও একটি বিমানবন্দর তৈরি করতে চাইছেন বিমান কর্তারা?

কেন্দ্রীয় সরকার সত্রে বলা হচ্ছে, কেন্দ্র যে রিজিওনাল কানেকটিভিটি স্কিম চালু করেছে, তার আওতায় বার্নপুরও রয়েছে। সে কারণেই ওই পরিকল্পনা। শুক্রবার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘যে বিমানসংস্থা বার্নপুর থেকে উড়ান চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে, তারা সমীক্ষা করে জানিয়েছে, যাত্রী পাওয়া যাবে। তাদের দাবি অনুযায়ী, বার্নপুরে পরিকাঠামো বানানো হবে। কিন্তু, বিমানবন্দর বানানোর খরচ তো দিতে হবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে? এটা অপচয় নয়? গুরুপ্রসাদ উত্তর দেননি।

যাঁর হাত ধরে ভারতের আকাশে প্রথম সস্তার বিমানসংস্থা ডানা মেলেছিল, সেই ক্যাপ্টেন গোপীনাথের ডেকান চার্টার্স-ই বার্নপুর থেকে উড়ান চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। সূত্রের খবর, এ রাজ্যে ১৮ আসনের বিমান নিয়ে আসছে তারা। ডেকানের এক কর্তার যুক্তি, বার্নপুর চালু হলে যাত্রী আসতে শুরু করবে। তিন বছর টিকে গেলে আর সমস্যা হবে না। তা ছাড়া ছোট বিমানবন্দর থেকে উড়ান চালালে অনেক কর ছাড়ও পাওয়া যায়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ বলে মনে করছেন অনেকে। বিমানবন্দর অফিসারদের একাংশের যুক্তি, এখনও কলকাতা বিমানবন্দর থেকেই ইউরোপ-সহ বহু দেশে সরাসরি উড়ান নেই। মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরুর তুলনায় এই শহরে সারা দিনের উড়ান সংখ্যাও অনেক কম। তাই কলকাতা থেকে উড়ান বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গের বাগডোগরা থেকেও নিয়মিত উড়ান বাড়ানোর দরকার রয়েছে। এমনিতেই অন্ডালে ভর্তুকি দিয়ে বিমান চালাচ্ছে রাজ্য। যাত্রী হয় মেরেকেটে ২৫ থেকে ৩০ জন। ‘‘তা হলেই বুঝুন ব্যাপারটা,’’ — মন্তব্য বিমানবন্দরের এক অফিসারের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement