শশী পাঁজা। — ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে আবারও সুর চড়ালেন রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রী। শুক্রবার বিধানসভার বাদল অধিবেশনের এক প্রশ্নের উত্তরে শশী পাঁজা দাবি করেছেন, মিড ডে মিল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সরকারি অঙ্গনওয়াড়ি আধিকারিকদের বেতনের কেন্দ্রীয় সরকারের অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘১ অগস্ট কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আমাদের একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, অঙ্গনওয়াড়ি আধিকারিকদের বেতনের যে অংশ তাঁরা দিতেন, এ বার থেকে আর তাঁরা সেই অর্থ দেবেন না।’’ প্রসঙ্গত, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিচালনায় ত্রিস্তর আধিকারিকদের ক্ষেত্রেই নতুন নির্দেশিকা কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে বলে দাবি মন্ত্রীর।
অঙ্গনওয়াড়ি জেলা আধিকারিক ‘চাইল্ড প্রোজেক্ট অফিসার’ (সিপিও), ‘চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট অফিসার’ (সিডিপিও) ও ‘মিড ডে মিল সুপারভাইজ়ার’দের বেতনের ৭৫ শতাংশ রাজ্য সরকার এবং ২৫ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার দিত। কিন্তু শশী দাবি করেছেন, এই আধিকারিকদের বেতনে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ শূন্য করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, আগে এই আধিকারিকদের বেতনের ৯০ শতাংশ অর্থ দিত কেন্দ্র। ১০ শতাংশ দিত সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার। কিন্তু ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসার পর এই নিয়মে বদল আসে। তার পর থেকেই ওই আধিকারিকদের বেতনের জন্য ৪০ শতাংশ অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার এবং ৬০ শতাংশ অর্থ রাজ্য দেওয়া শুরু করে। বর্তমানে সেই খাতে কেন্দ্রীয় সরকার ২৫ শতাংশ এবং রাজ্য ৭৫ শতাংশ অর্থ দিত। শশীর অভিযোগ, সেই নিয়মে বদল আসার ফলে সিপিও, সিডিপিও এবং ‘মিড ডে মিল সুপারভাইজ়ার’দের বেতনের পুরো অর্থ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।
নিয়মে বদল আসার ফলে প্রতি বছর রাজ্য সরকারের ৮১ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা খরচ হবে। তবে মন্ত্রীর এমন অভিযোগের জবাবে বিজেপি বিধায়ক অরূপ দাস বলেন, ‘‘রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি কী ভাবে চলছে, তার কি কোনও খোঁজ রাখেন মন্ত্রী? অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলোর প্রকৃত সত্য তুলে ধরতে সামাজিক অডিটের প্রয়োজন। এবং সেই অডিট রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনলে দেখা যাবে, রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে কী ব্যাপক রকমের দুর্নীতি চলছে। তাই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ না তুলে রাজ্য সরকার মিড ডে মিল পরিষেবায় দুর্নীতি রোধে পদক্ষেপ নিক।’’