কাজের বার্ষিক মূল্যায়নে ১০ নম্বরের মধ্যে বরাবর ছয় বা তার বেশি পেয়েছেন তিনি। টানা পাঁচ বছর এমন নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও কানে কম শোনায় এক ব্যক্তিকে ‘অক্ষম’ বলে ঘোষণা করেছে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড। কেন্দ্রীয় অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল (ক্যাট) সোমবার বোর্ডের সিদ্ধান্তের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে জানিয়েছে, ওই ব্যক্তিকে এখন কাজ থেকে সরানো যাবে না।
ক্যাট সূত্রের খবর, ব্যারাকপুরের বাসিন্দা চিত্তেশ্বর সামন্ত ইছাপুরের মেটাল অ্যান্ড স্টিল ফ্যাক্টরিতে জুনিয়র ওয়ার্কস ম্যানেজার পদে কাজ করেন। তাঁর বয়স ৫৩ বছর। ২০০৫ সালে তাঁর শোনার ক্ষমতা কমে যায়। ব্যারাকপুরের বিএন বসু মহকুমা হাসপাতাল তাঁকে পরীক্ষা করে জানিয়ে দেয়, শোনার ব্যাপারে তাঁর ৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
চিত্তেশ্বরবাবুর আইনজীবী কল্যাণ সরকার মঙ্গলবার জানান, কাজ করতে তাঁর মক্কেলের অসুবিধা নেই। ৮ জুন কারখানা-কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তিকে চিঠি দিয়ে জানান, ৩০ দিনের মধ্যে কেন তাঁকে অবসর নিতে বলা হবে না, তা লিখিত ভাবে জানাতে হবে। চিত্তেশ্বরবাবু পরের দিনই কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানান, তাঁকে যে-সব কাজ করতে বলা হয়, সবই নির্ভুল ভাবে করে দেন তিনি।
কর্তৃপক্ষ পরবর্তী পদক্ষেপ না-করায় অগস্টে ক্যাটে মামলা করেন চিত্তেশ্বরবাবু। ক্যাটের বিচারপতি বিদিশা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিশেষজ্ঞ সদস্য নন্দিতা চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, কারখানা-কর্তৃপক্ষকে বক্তব্য স্পষ্ট করে জানাতে হবে। অগস্টের শেষে কর্তৃপক্ষ ওই কর্মীকে জানান, অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড জানিয়েছে, চিত্তেশ্বরবাবুর কর্মক্ষমতা নেই। তাই তাঁকে আর কাজে রাখা যাবে না।
বোর্ডের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর ফের ক্যাটে মামলা করেন চিত্তেশ্বরবাবু। তাঁর আইনজীবী জানান, বোর্ডের নিয়ম, বার্ষিক মূল্যায়নে চার বা তার কম নম্বর পেলে তা খারাপ বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু তাঁর মক্কেল বিগত পাঁচ বছরের মূল্যায়নে কখনওই ছয়ের কম নম্বর পাননি। বরং সাতও পেয়েছেন।
কারখানা-কর্তৃপক্ষের আইনজীবী সমীর পাল জানান, কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জেনে তিনি আদালতে জানাবেন। ক্যাট নির্দেশ দিয়েছে, কর্তৃপক্ষকে হলফনামা দিয়ে বক্তব্য জানাতে হবে। পরবর্তী শুনানি হবে ৭ জানুয়ারি।