পলিথিন-মুক্ত মণ্ডপ? নরেন্দ্র মোদী সরকার দেবে পুরস্কার

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছেন, ধর্মের মোড়কে বিজেপির সংগঠন বাড়ানোর রাজনৈতিক ছক গোটা উদ্যোগটি।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৩৬
Share:

ছবি: পিটিআই।

আয়কর নোটিস দিয়ে পুজো প্যান্ডেলে এ বার বাংলার মানুষের মন জয়ে নামল নরেন্দ্র মোদী সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ক্লাবগুলিকে অনুদানে ভরিয়ে দিচ্ছেন, তখন পাল্টা রণকৌশলে প্লাস্টিক মুক্ত ‘স্বচ্ছ’ মণ্ডপকে পুরস্কৃত করতে এগিয়ে এল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী প্রহ্লাদ পটেল আজ জানান, পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলার দু’টি করে ‘পলিথিন মুক্ত’ পুজো মণ্ডপকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেবে তাঁর মন্ত্রক। তাঁর ইচ্ছে, আগামী বছর আরও বড় করে ঝাঁপানোর। পুজোর জন্য বরাদ্দ করা হবে আলাদা বাজেট।

Advertisement

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছেন, ধর্মের মোড়কে বিজেপির সংগঠন বাড়ানোর রাজনৈতিক ছক গোটা উদ্যোগটি। পাল্টা যুক্তিতে মন্ত্রী বলেছেন, এ নিয়ে বিতর্ক হোক। তবেই বোঝা যাবে ওই পরিকল্পনায় কোথাও খামতি রয়ে যাচ্ছে কি না।

লক্ষ্য ২০২১। শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে তাই বাংলার ঘরে-ঘরে পৌঁছে যাওয়ার কৌশল নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। ইতিমধ্যেই ঠিক হয়েছে, জনসংযোগে কলকাতা ও শহরতলির বেশ কিছু পুজো উদ্বোধনে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মহালয়ার পরেই কলকাতা যাবেন কার্যকরী সভাপতি জে পি নড্ডাও। পুজো উদ্বোধন যাওয়ার কথা বিজেপির আরও কিছু হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীরও। দলীয় উদ্যোগের পাশাপাশি রাজ্যের প্রতিটি পুজোকে প্রতিযোগিতায় টেনে এনে সরাসরি মোদী সরকারের কর্মযজ্ঞে শামিল করার পরিকল্পনা নিল শাসক শিবির। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আগামী ২ অক্টোবর থেকে প্লাস্টিক তথা পলিথিন দূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার সঙ্কল্প নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে পলিথিনের ব্যবহার রুখতে ঝাঁপাচ্ছে সংস্কৃতি মন্ত্রকও। দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করে প্লাস্টিক মুক্ত পরিবেশ গড়ার আহ্বান করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমি সমস্ত পশ্চিমবঙ্গবাসীকে ওই অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমি আশা করছি এ বারে পলিথিন মুক্ত পুজো হবে।’’ পরে তিনি ফোনে জানান, ‘‘বাংলার দুর্গা পুজোর চর্চা বিশ্ব জুড়ে। প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে অভিযানকেও আমরা আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যেতে চাই। তাই দু’টি বিষয়কে জুড়ে ওই পদক্ষেপ।’’

Advertisement

সংস্কৃতি মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এমন উদ্যোগ এই প্রথম। অতীতে এ ধরনের পুরস্কার ঘোষণা কখনও হয়নি। সব শুনে তৃণমূলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘দুর্গা পুজো যে রাজনীতির জায়গা নয়, সেটা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বুঝতে হবে। বাংলায় এখনও সব দলের লোকেরা মিলেমিশেই অঞ্জলি দেয়। শারদোৎসব সংগঠন বাড়ানোর জায়গা নয়।’’ তৃণমূলের তোলা রাজনীতির অভিযোগ শুনে হাসছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। প্রহ্লাদ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দল অনেক কিছু বলতেই পারে।

আমি চাই বিতর্ক হোক। তবেই গোটা পরিকল্পনাটি নিখুঁত করা সম্ভব। কারণ প্লাস্টিক মুক্ত দেশ গড়া সরকারের লক্ষ্য।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement