West Bengal Lockdown

লকডাউনে উড়ান বন্ধই, রাজ্যের ইচ্ছায় সায় কেন্দ্রের 

শুক্রবার দুপুরে বিমান মন্ত্রকের তরফে কলকাতায় এই নির্দেশ এসে পৌঁছনোর পরেই শনিবার কলকাতা থেকে যাবতীয় উড়ান বাতিলের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ০৩:৫৪
Share:

ছবি: সংগৃহীত

সপ্তাহের যে সমস্ত দিনে রাজ্য সরকার লকডাউন ঘোষণা করবে, সেই দিনগুলিতে এ বার কলকাতা থেকে উড়ান পরিষেবাও বন্ধ থাকবে বলে জানিয়ে দিল কেন্দ্র।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে বিমান মন্ত্রকের তরফে কলকাতায় এই নির্দেশ এসে পৌঁছনোর পরেই শনিবার কলকাতা থেকে যাবতীয় উড়ান বাতিলের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ইন্ডিগোর ২৭টি, এয়ার ইন্ডিয়ার সাতটি, স্পাইসজেটের ন’টি এবং এয়ার এশিয়ার চারটি-সহ প্রায় ৪৭টি উড়ান কলকাতা থেকে ছাড়ার কথা ছিল শনিবার। সমসংখ্যক উড়ানের নামারও কথা ছিল। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের জেরে প্রায় আট হাজার যাত্রীর টিকিট বাতিল করতে হয়েছে।

যে হেতু রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই আগামী বুধবার, ২৯ জুলাই লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছে, তাই সে দিনও কলকাতা থেকে যাবতীয় উড়ান বাতিল করা হয়েছে।

Advertisement

লকডাউনের দিনগুলিতে কলকাতা থেকে উড়ান পরিষেবাও বন্ধ থাক, এমনটাই চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, লকডাউনে বিমানযাত্রীরা বিশেষ সুবিধা পেলে অন্যেরা

পাবেন না কেন? তাঁরা কী দোষ করলেন? কিন্তু বিমানবন্দরে নেমে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবস্থা করে কেউ যদি বাড়ি যেতে চান, অথবা বাড়ি থেকে নিজেদের গাড়িতে বিমানবন্দরে এসে উড়ান ধরেন, তা হলে রাজ্য কেন আপত্তি করবে, সেই প্রশ্নের সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার লকডাউনের প্রথম দিনে অবশ্য কলকাতা থেকে উড়ান চলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খবর ছিল, উড়ান চলার ব্যাপারে রাজ্যের আপত্তি রয়েছে। নবান্নের খবর, মুখ্যমন্ত্রীকে অন্ধকারে রেখেই রাতে রাজ্য প্রশাসনের একাংশ উড়ান চালানোর বিষয়ে সম্মতি দেন। রাজ্যের সাহায্য নিয়েই বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে সারা দিনে প্রায় ৮৪টি উড়ান ওঠানামা করে। ক্ষুব্ধ মমতা এর পরে রাতেই মুখ্যসচিবকে বলেন কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়ে উড়ান বন্ধ করার কথা বলতে। সেই মতো ওই রাতেই ইমেল পৌঁছে যায়। শুক্রবার দুপুরে বিমান মন্ত্রকও জানিয়ে দেয়, রাজ্য যা চাইছে, তা-ই হবে।

সংক্রমণ কমাতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কলকাতা থেকে ছ’টি শহরের সরাসরি উড়ান বন্ধ করার জন্য এর আগেও কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছিল রাজ্য। রাজ্যকে বোঝানোর ব্যর্থ চেষ্টার পরে ৬ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত দিল্লি, মুম্বই-সহ ছ’টি শহরের সরাসরি উড়ান বন্ধ করে দেয় কেন্দ্র। গত ১৮ জুলাই রাজ্য সেই নিষেধাজ্ঞা ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর অনুরোধ করলে কালবিলম্ব না-করে তাতে সায় দিয়ে দেয় বিমান মন্ত্রক। এ বারেও তার অন্যথা হয়নি।

একটি উড়ান সংস্থার এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা জানতাম, বিমান পরিবহণ কেন্দ্রের বিষয়। কেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমস্ত অনুরোধ এ ভাবে এক কথায় কেন্দ্র মেনে নিচ্ছে, তা বলতে পারব না। তবে এই মুহূর্তে অসম, মণিপুর ও কর্নাটকে লকডাউন চলছে। অথচ, গুয়াহাটি, ইম্ফল বা বেঙ্গালুরুর বিমানবন্দর থেকে উড়ান পরিষেবা বন্ধ করা হয়নি। সংখ্যায় কম হলেও উড়ান চলছে।

‘ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশন’-এর পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবি এ দিন বলেন, “সামনের সপ্তাহে বুধবার ছাড়া আর কবে লকডাউন হবে, সেটা এখনও আমরা জানি না। আমাদের কাছে যাঁরা টিকিট করাতে আসছেন, তাঁদের বলা হচ্ছে, আপনি যে দিনের টিকিট কাটবেন, রাজ্য যদি সেই দিনই লকডাউন ঘোষণা করে, তা হলে উড়ান বাতিল হবে। আর টিকিটের টাকা আপনি ফেরত পাবেন না। আপনার নামে তা উড়ান সংস্থার ঘরে জমা থাকবে।”

একটি উড়ান সংস্থার এক কর্তার কথায়, “৩ অগস্ট থেকে যে সপ্তাহ শুরু হচ্ছে, সেই সপ্তাহে কোন দু’দিন লকডাউন হবে, তা এখনও আমরা জানি না। সেটা সম্ভবত ৩ তারিখেই জানা যাবে। তখন ওই দু’দিনের সমস্ত উড়ান বাতিল করার

অর্থ, গোটা দেশের উড়ানসূচি

লন্ডভন্ড করে ফেলা। তা-ও কেন্দ্রের নির্দেশে বাধ্য হয়ে করতে হবে। আগামী এক মাসের লকডাউনের দিনগুলি যদি আগাম জানা যেত, তা হলেও না হয় পরিকল্পনা করতে একটু সুবিধা হত।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement