মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে না থাকার ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আচরণবিধি নিয়ে অনুসন্ধান কমিটি আগেই গঠন করেছিল কেন্দ্র। সূত্রের খবর, পুজো মিটলেই সেই কমিটির সামনে হাজিরা দিতে হতে পারে তাঁকে। অবশ্য এই বিষয়টি নিয়ে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে (ক্যাট) আলাপনবাবুর দ্বারস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে।
সূত্রের খবর, ১৮ অক্টোবর অনুসন্ধান কমিটির সামনে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব এবং বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপনবাবুকে। তবে রাজ্য প্রশাসনিক মহলে অনেকের ধারণা, কেন্দ্রের সেই নির্দেশ মেনে হাজিরা দেওয়ার বদলে তিনি কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থও হতে পারেন। যদিও এখনও পর্যন্ত বিষয়টি স্পষ্ট হয়নি।
এই বছরের ২৮ মে কলাইকুণ্ডা বিমানঘাঁটিতে ইয়াস পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তুলে দিয়ে এবং তাঁর অনুমতি নিয়ে তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপনবাবুকে সঙ্গে নিয়ে দিঘার প্রশাসনিক বৈঠকে চলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে সশরীরে হাজির না থাকার জন্য বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আইনে কেন তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না-লিখিত ভাবে আলাপনবাবুর কাছে জবাব চায় কেন্দ্র। কেন্দ্রের চিঠির উত্তর দিলেও গত জুন মাসে কেন্দ্রীয় কর্মীবর্গ মন্ত্রক চিঠি পাঠিয়ে জানায়, অনুসন্ধান কমিটির কাছে সশরীরে হাজিরা অথবা লিখিত ভাবে নিজের বক্তব্য জানাতে হবে আলাপনবাবুকে। তার অন্যথায় অনুসন্ধান কমিটি তাঁর বিরুদ্ধে একতরফা পদক্ষেপ করতে পারে। যদিও সূত্রের খবর, সেই নির্দেশে সাড়া দিয়ে নিজের বক্তব্য কেন্দ্রকে লিখিত ভাবেই পাঠিয়েছিলেন আলাপনবাবু।
অন্যদিকে, এ দিনই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইটবার্তায় মন্তব্য করেছেন, আইন সকলের ঊর্ধ্বে। প্রাক্তন মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আচরণবিধি নিয়ে যে অভিযোগ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে অনুসন্ধানকারী অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। তবে রাজ্যের অভিজ্ঞ আমলাদের একাংশের বক্তব্য, আলাপনবাবুর বিরুদ্ধে আচরণবিধি নিয়ে এ ভাবে অভিযোগ তোলা যুক্তিযুক্ত হবে না। কারণ, রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যসচিব হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশও তাঁকে মানতে হত। তা ছাড়া যে বৈঠক নিয়ে এত বিতর্ক, সেখান থেকে বেরনোর আগে মোদীর অনুমতি নিয়েছিলেন মমতা।