বিহারে ধাক্কা খাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের কর্মপন্থা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বিজেপি। এক দল মনে করছেন, রাহুল সিংহকে সরিয়ে অন্য কাউকে রাজ্য সভাপতি করে এ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোটে লড়লে দল লাভবান হবে। অন্য দল মনে করছে, রাহুলবাবুর নেতৃত্বেই বিধানসভা ভোটে যাওয়া উচিত। দু’পক্ষই বৃহস্পতিবার কলকাতায় দরবার করলেন দলের দুই কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়র কাছে। বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ও এ দিন কৈলাসের সঙ্গে দেখা করেন। প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য, পূর্ণদাস বাউল-সহ কয়েক জন শিল্পীও কৈলাস এবং শিবপ্রকাশ দু’জনের সঙ্গেই দেখা করেন। এমনকী, টলিউডে চলতি সময়ের এক তারকা অভিনেত্রীও বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে দলের একটি সূত্রের ইঙ্গিত।
বিহারের বিধানসভা ভোটে বিজেপি-র পরাজয়ের ধাক্কার পরে এ রাজ্যে দলের কর্মীদের চাঙ্গা করতে পথ হাতড়াচ্ছেন নেতৃত্ব। আর সেখানেই দ্বিমত দেখা দিয়েছে দলের অন্দরে। রাহুলবাবুকে পদচ্যুত করতে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠী দীর্ঘ দিন ধরেই সক্রিয়। উৎসবের মরসুমের পরে তারা আবার তেড়েফুঁড়ে নেমেছে। মঙ্গলবার শিবপ্রকাশ কলকাতায় এসেছিলেন। ফের তিন শহরে এসেছেন এ দিন। এই দফায় কলকাতা ও উত্তরবঙ্গ মিলিয়ে তাঁর কয়েক দিন রাজ্যে কাটানোর কথা। একই সঙ্গে কৈলাসও কলকাতায় ছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, রাহুলবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা-নেত্রীরা এ দিন আলাদা আলাদা ভাবে তাঁদের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যে দলের দৈন্য দশার কথা জানিয়েছেন। আবার রাহুলবাবুকে রেখেই বিধানসভা ভোটে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন তাঁর গোষ্ঠীর নেতারা। সুব্রতবাবু ও পূর্ণদাস অবশ্য পেশাগত কারণে কৈলাসদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বলে খবর।
রাজ্য বিজেপি-র একাংশের বক্তব্য, নানা নাম নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের পর আরএসএস এখন দিলীপ ঘোষকে রাজ্য সভাপতি করতে চাইছে। যদিও রাহুলবাবুর বিরোধীরা সকলে ওই বিষয়ে সহমত নন। আবার রাহুলবাবুর শিবিরের পছন্দ বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বা সুশান্তরঞ্জন পাল। রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে দলের পদাধিকারী এবং লকেটকে মহিলা মোর্চার মুখ করার চেষ্টাতেও রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ তৎপর। সব পক্ষের মত শুনে আরএসএসের রাজ্য দফতরে বৈঠক করার কথা কৈলাস-শিবপ্রকাশের।